দক্ষিণ 24 পরগণা জেলার আলিপুর সদর সাব-ডিভিশনের বিষ্ণুপুর দুই নম্বর ব্লক ও বিষ্ণুপুর থানার অন্তর্গত নহাজারি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চরম সাম্প্রদায়িক আক্রমণ নেমে এসেছে।ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার 10 মে রাত থেকে। স্থানীয় এক গ্রাম্য বিবাদকে কেন্দ্র করে এই হিংসা শুরু হয় এবং বেছে বেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার 11 মে রাত থেকে হিন্দুদের উপর আবার আক্রমণ শুরু হয় এবং ভোর রাত পর্যন্ত হিংসা চলতে থাকে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী মসজিদের লাউডস্পিকার থেকে লাগাতার সাম্প্রদায়িক প্ররোচনামূলক ঘোষণার মাধ্যমে দাঙ্গাবাজদের সংগঠিত করা হয়। এরপরে প্রায় দুই শত সশস্ত্র দাঙ্গাবাজ “নারায়ে-তকদীর, আল্লাহ হু আকবর” শ্লোগান দিতে দিতে বোমা,পিস্তল, তরোয়াল নিয়ে নিরীহ হিন্দুদের উপর আক্রমণ শুরু করে এবং নির্বিচারে হিন্দুদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুঠপাট ও ভাঙচুর করে। বহু হিন্দু মারাত্মক ভাবে জখম হন। রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে তৃণমূল, বিজেপি সহ সব দলের হিন্দুরাই এই জেহাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
দুদিন ধরে চলা এই একতরফা সাম্প্রদায়িক আক্রমণে এলাকার ৫০টিরও বেশি হিন্দু বাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বগাখালী বাজারে হিন্দুদের দোকানপাট যথেচ্ছভাবে লুঠপাট ও ভাঙচুর করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গ্রামে ঢুকতে গেলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজদের বাধার সম্মুখীন হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটবৃষ্টি ও বোমাবাজি শুরু করে। এর ফলে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
সর্বভারতীয় ইংরেজি চ্যানেল Times Now এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো বাংলা সংবাদমাধ্যম খবরটি প্রকাশ করার সৎসাহস দেখাতে পারেনি।
তবে রাজ্যসভার মাননীয় সাংসদ শ্রী স্বপন দাশগুপ্ত সম্প্রতি এক প্রথম শ্রেণীর বাংলা সংবাদপত্রে প্রকাশিত তাঁর সাক্ষাৎকারে এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেছেন।
পরিস্থিতি বর্তমানে এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে ভীতসন্ত্রস্ত হিন্দুরা প্রাণভয়ে ও পরিবারের নারীদের সম্ভ্রম বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
অভিজ্ঞ মহলের মতে পূর্ববঙ্গে গ্রামের পর গ্রাম যেভাবে ক্রমশ হিন্দুশূণ্য করা হয়েছে, এপারের হিন্দুদের উপরেও সেই একই কায়দায় আক্রমণ নেমে আসছে।
ঈশান কোণে জমা এই বিপদের কালো মেঘ দেখে ঘরপোড়া গরু হিন্দুদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে- পশ্চিমবঙ্গ কি তবে এবার পশ্চিম বাংলাদেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে ?