নির্দেশ উড়িয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে তেহট্টের ৫ করোনা আক্রান্তের পরিবার

বেপরোয়া মনোভাব। আর তারই খেসারত দিতে হল তেহট্টের (Tehott) পরিবারকে। মাসুল দিচ্ছে ৯ মাস, ৬ বছর ও ১১ বছরের তিনটি শিশু। চিকিত্সকের পরামর্শ না মেনে করোনার সঙ্গে ‘লুকোচুরি’ খেলতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন একই পরিবারের ৫ জন। 

রাজ্যে চলছে লকডাউন। তার মধ্যে পিলে চমকে দেওয়ার মতো খবর এল শুক্রবার সন্ধেয়। নদিয়ার তেহট্টে আক্রান্ত হলেন একই পরিবারের ৫ জন।  স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ১৬ মার্চ পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিল ওই পরিবার। এক যুবক লন্ডন থেকে ফিরে অংশ নিয়েছিলেন সেখানে। দিল্লিতেও ওই পরিবারের বাড়ি। ওই যুবকের এক বোন থাকেন সেখানে। তাঁর ১১ বছরের সন্তান রয়েছে। আর এক বোন থাকেন উত্তরাখন্ডে। তাঁর ৯ মাসের এবং ৬ বছরের দুই শিশুকন্যা রয়েছে। 

দিল্লিতে (Delhi) অনুষ্ঠানেরই পর অসুস্থ হয়ে পড়েন লন্ডন ফেরত ওই যুবক। তাঁকে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর নমুনা পরীক্ষায় মেলে নভেল ভাইরাস। গোটা পরিবারকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেয় দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কাই করেনি তারা।  

দিল্লি থেকে ট্রেনে ২০ মার্চ রাজ্যে আসে ওই পরিবার। কলকাতা থেকে পরেরদিন পৌঁছয় তেহট্টে। ফের তেহট্টে একটি অনুষ্ঠানে সামিল হয় পরিবারটি। ২৩ মার্চ সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৪৭ বছরের এক মহিলা। দেখা দেয় সর্দিকাশি। স্থানীয় হাসাপাতালে যান। সন্দেহ হওয়ায় সেখানকার চিকিত্সকরা যোগাযোগ করেন স্বাস্থ্য ভবন ও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বাকি ১৩ জনকে পাঠানো হয় হোম কোয়ারান্টাইনে।  তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় বুধবার। পরপর পরীক্ষায় শুক্রবার নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হদিস মেলে রিপোর্টে। এরপরই ২০ জনকে রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে। 

শনিবার কলকাতায় এনে তাঁদের রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট সেকেন্ড ক্যাম্পাসে ভর্তি করানো হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রশাসন অজয় চক্রবর্তী বলেন,”দিল্লি থেকে বিষয়টা আমাদের একবার জানানো হলে খুব ভালো হতো। আমরা অনেক আগেই বিষয়টা নজরে আনতে পারতাম। এদের আটকে নজরদারি করতে পারতাম। পরিবারটিকে আমাদের বলার কিছু নেই। চিকিৎসকরা এই গোটা পরিবারকে কোয়ারান্টিনে থাকতে বলেছিলেন। তাঁরা তা না করে লুকিয়ে কলকাতায় চলে এসে নিজেদের বাড়ি  চলে যান। সেখানে তারা আবার অনুষ্ঠান করেন। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। নজর রাখছি। তৃতীয় দফায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা জনসাধারণের মধ্যে সংক্রমণ এখনও হয়নি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.