কয়লাপাচার কাণ্ডের তদন্তে এবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সিবিআই। অভিষেকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দিল সিবিআই। জানা গেছে রবিবার বেলা ২টো নাগাদ সিবিআইয়ের ৫ জনের প্রতিনিধিদল অভিষেকের কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছয়। সেখানে অভিষেকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেন তাঁরা। তবে সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না অভিষেক বা তাঁর স্ত্রী। সূত্রের দাবি, কয়লা কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁরা তদন্তে জানতে পেরেছেন। সেই সূত্রেই তাঁরা রুজিরাকে জেরা করতে চান।
কয়লাপাচার কাণ্ডে আগেই অভিষেক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রকে ফেরার ঘোষণা করেছে আদালত। এবার সিবিআইয়ের নজর পড়ল অভিষেকের ওপর। রবিবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতায় অভিষেকের বাসভবন শান্তিনিকেতন রেসিডেন্সিতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিশ দেন সিবিআই আধিকারিকরা। মিনিট ১০ তাঁরা অভিষেকের বাড়িতে ছিলেন। সিবিআইয়ের তরফে জানা গিয়েছে, সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না রুজিরা। ফলে কখন তিনি বাড়িতে থাকবেন তা সিবিআই আধিকারিকদের জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেদিনই অভিষেকের বাসভবনে গিয়ে রুজিরাকে জেরা করবেন আধিকারিকরা।
তবে সিবিআই সূত্রে বলা হয়েছে, রুজিরাকে ফৌজদারি আইনের ১৬০ ধারায় সাক্ষী হিসাবে জেরা করতে চান তাঁরা। রুজিরাকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে না। সেখানে তাঁকে তলব করা হয়নি। তাঁর বাড়িতে বা তাঁর পছন্দমতো জায়গায় সিবিআই গোয়েন্দারা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। নোটিশেরর সঙ্গে সিবিআইয়ের এক গোয়েন্দার নম্বরও দেওয়া হয়েছে। যাতে সেই নম্বরে ফোন করে রুজিরা জানাতে পারেন, কখন তিনি গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।
বেআইনি কয়লা পাচার নিয়ে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে তদন্তে তৎপর সিবিআই। ওই কাণ্ডে ইসিএলের কর্তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এফআইআর করা হয়েছে লালার বিরুদ্ধে। সিবিআই এফআইআরেও জানিয়েছে, বেআইনি কয়লা কাণ্ডের অন্যতম পাণ্ডা ছিল লালা। সিবিআইয়ের নোটিশ পাওয়ার পর থেকেই লালা ফেরার। তার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়েছে।
লালার পাশাপাশি বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রকেও খুঁজছে সিবিআই। অভিষেক ঘনিষ্ঠ বিনয় মিশ্রের বাসভবন-সহ একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। তবে তাঁরও হদিশ পাননি গোয়েন্দারা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত ছাড়াও আরও ২টি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে বিনয়ের কাছে। কয়লাপাচারে প্রভাবশালী যোগ খুঁজতে তাই এবার সরাসরি অভিষেকের ঘরে ঢুকল সিবিআই।
এমনিতেই কালীঘাটে অভিষেকের বাড়ির সামনে পুলিশি নিরাপত্তা ও মোতায়েন উল্লেখযোগ্য ভাবেই থাকে। এদিন সিবিআই গোয়েন্দারা যখন নোটিশ দিতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁদের বলা হয় যে বাড়িতে কেউ নেই। তবে সিবিআই গোয়েন্দারা বাড়িতে নোটিশ দিয়ে এসেছেন বলেই জানা গিয়েছে।