ক্যান্টিনের ভাত আর আম্মার নামে দেওয়া অর্ধেক ডিম বাংলার জন্য গর্বের নয়, ওটা লজ্জার

আসলে এই মানুষ গুলো বিজেপিকে ভোট দিলে বিজেপি ক্ষমতায় চলে আসবে। তখন এই মানুষ গুলোর পানীয় জল, ইলেকট্রিক, আবাস যোজনার মাধ্যমে বাড়ি, মুদ্রা লোন নিয়ে ব্যবসা এসব সুবিধা পাবে। তাতে এই তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অর্থাৎ স্বঘোষিত সর্বহারা পার্টির নেতাদের বাবুগিরি চলবে না এদের ওপরে। ঐ যে মনে আছে আম্ফান হতেই তিন তলা বাড়ির মালিক সর্বহারা নেতা কান্তি গাঙ্গুলি একটা করে ত্রিপল দিছিল আর সেটার বাছাই করা 72 টা ছবি তুলে “বামপন্থীরা গরিবের পাশে” বলে ভোট চাইতে শুরু করেছিল। সেসব বন্ধ হয়ে যাবে যে। আসলে মানুষ যত গরিব থাকবে ততই এই সর্বহারা নেতাদের সুবিধা। তারা 20 টাকার শ্রমজীবী ক্যান্টিনে ভাত দিয়ে বলবে মানুষের পাশে আছি। কর্ম হীন মানুষ , শিক্ষা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে এই নেতাদের হাত থেকে দু মুঠো ভাত পেয়ে ওদের ভগবান মনে করে ভোট দেবে।

দারুন সব আইডিয়া নিয়েই 34 বছর ধরে রাজত্ব করেছে। প্রথমত শিক্ষা থেকে এদের দূরে সরিয়ে দাও। প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তা তৈরি করা হবেনা। তাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। বাইরের থেকে মানুষ যাবে না সেইসব এলাকাতে। অতএব এই নেতাদের পোষ্য ছাড়া বাকি কেও ওদের ভালো মন্দ বিচার করা শেখাতে পারবেনা। এরপর আসে বিদ্যুৎ। সেটাও দেওয়া হবে না। রাস্তা এবং বিদ্যুৎ নেই মানেই একটা ছোট কোনো শিল্পপতি ছেড়ে দিন, টাটা আম্বানি ওখানে গিয়ে কিছুই করতে যাবেনা। কারখানা হবে না। কারখানা না হলে কাজ থাকবে না। কাজ নেই মানে টাকা নেই। অর্থাৎ যাদের হতে কাজ নেই, তাদের হাতে টাকা নেই। টাকা নেই খাবার কেনার জন্য, তখন খালি পেটে শিক্ষা গ্রহণ হবে পূর্ণিমার চাঁদ। শুধু শুনবে দেখবে। কিন্তু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। শিক্ষা না থাকলে বই পড়তেও পারবে না। বিচার করতে শিখবে না। আসলে নিজেদের সুবিধার জন্য, ক্ষমতা দখল করে রাখতে বঙ্গের মানুষের যতটা সর্বনাশ করা যায় সেটাই করবে এরা। মনে আছে কত সুন্দর ভাবে , বিদ্যুতের জন্য পাওয়ার গ্রিডের কাজ এরা থামিয়ে দিতে পেরেছে? শুধু মাত্র শিক্ষা নেই বলে খুব সহজেই বুঝিয়ে দিতে পেরেছে যে পাওয়ার গ্রিড তৈরি হলে সেই এলাকার মহিলারা বন্ধ্যা হয়ে যাবে।। শিশু যদি জন্ম নিয়ে থাকে সে পঙ্গু হবে। এইভাবেই 34 বছর ধরে উন্নয়ন আটকে রেখেছিল। 

মনে করুন একটা বাচ্চা ছেলে, তাকে আপনি বাড়িতেই আটকে রেখেছেন। সে শিক্ষার আলো দেখেনি। জন্ম থেকেই আপনাকে দেখছে। একটা দিনের পর সে সম্পূর্ন ভাবেই আপনার ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে উঠবে। সে দিনের শেষে ভাবতে শুরু করবে, আপনি তাকে থাকার জন্য একটা রুম দিয়েছেন। আপনি তাকে দু মুঠো খেতেও দিচ্ছেন।।এর বদলে সে দিন রাত আপনার ফরমায়েশ পালন করে চলেছে। কিন্তু সে যদি স্কুল যেত তাহলে সেও শিক্ষিত হয়ে উঠত।বড় হয়ে একদিন সে চাকরি পেত অথবা কোনো ব্যবসা করত। নিজের রোজগারের টাকাতেই সে খাবার কিনে খেত। নিজের রোজগারের টাকাতে বাড়ি বানিয়ে থাকত। তাতে আপনার কি কোনও সুবিধা হত? নাহ, আপনি ওকে দিয়ে বেকার যুবক হিসেবে খাটাতেই পারতেন না। আপনাকে সে বাধ্য হয়ে ধন্য ধন্য করত না। আপনার ভুল গুলোর প্রতিবাদ করত।

এই ছবিও সেই কথা বলছে। 1947 সাল থেকে কংগ্রেসের মতো গরিবের জন্য এত কিছু করেছে এই বামপন্থীরা যে সেই গরিব মানুষ গুলো ঝড় হলে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই বলে ত্রিপলের জন্য হাত পাতে নেতার সামনে। দু মুঠো খাবার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। 

এক মাস এদের মত লাইন দিয়ে দাড়িয়ে থেকে খাবার খেয়ে দেখুন, তখন বুঝবেন এদের জন্য কত ভালো কাজ করেছেন।

বেকার যুবক যুবতীদের একটা মাপকাঠি তৈরি করে দিয়েছেন বেকারত্বের।।সরকারি চাকরি মানেই সে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেই চিন্তা ভাবনা বঙ্গের তরুণ সমাজের মন থেকে মুছে গিয়েছে আপনাদের গর্বের 34 এর কারণে। এই আপনারাই আবার অভিযোগ করেন অবাঙালি এসে বঙ্গে ব্যবসা করে টাকা কামিয়ে চলে যাচ্ছে।

উন্নয়ন মানে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া। শিল্প যাতে আসে তার জন্য রাস্তা বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থার পাশাপাশি পর্যাপ্ত জমির ব্যবস্থা করা। তবেই শিল্প আসবে, তরুণ সমাজ নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ খুজে নেবে, ব্যবসা করবে। আত্মনির্ভর ভারত তবেই হবে।।

ক্যান্টিনের ভাত আর আম্মার নামে দেওয়া অর্ধেক ডিম বাংলার জন্য গর্বের নয়, ওটা লজ্জার।

আপনি নিজে যেমন হাত পেতে কিছু চাইতে লজ্জা করেন, সেই কাজ অন্য কাওকে করতে বাধ্য করবেন না।

✍️ পিউ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.