পাহাড়ে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির বন্যা অমিত শাহের (Amit Shah) সভায়। ঢালাও প্রতিশ্রুতির সঙ্গে তিনি গোর্খা রাজনীতির সূক্ষ্ম চালে মাত করতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোর্খা ঘনিষ্ঠতাকে। দার্জিলিংয়ে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, দোসরা মে রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে গোর্খাদের বিরুদ্ধে হওয়া সমস্ত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দার্জিলিংয়ের বর্তমান নষ্ট হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কিন্তু এই শৈলশহরের ভবিষ্যত ঠিক করবে বিজেপি। পানীয় জল, শিক্ষা , স্বাস্থ্য কোনও কিছুই পায় না দার্জিলিং। সেই সব ব্য়বস্থা করবে বিজেপি সরকার। কোনও সমস্যাতেই পড়তে হবে না গোর্খা ভাইবোনেদের।
অমিত শাহের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে কোনও ভাবনা চিন্তা করেনি বিজেপি। যদি তবু তা কখনও হয়, তখনও গোর্খাদের নিশ্চিন্ত থাকতে হবে। কারণ গোর্খারা অনুপ্রবেশকারী নন। এদিন শাহ বলেন বিজেপির সঙ্গে গোর্খাদের সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। বিজেপি ক্ষমতায় আসলেই তফশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত করা হবে ১১টি গোর্খা জনজাতিকে। সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হবে গোর্খা ভাষাকে। দূরদর্শনে ও প্রসার ভারতীতে নেপালি ভাষায় অনুষ্ঠানও সম্প্রচার করা হবে।
দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন পুরসভা হল দার্জিলিং বলে জানিয়ে অমিত শাহ বলেন উন্নয়নের সবচেয়ে বেশি অধিকার ছিল এই শহরের। কিন্তু লাভ হয়নি কিছু। শাহের দাবি পাহাড়ের ঢালাও উন্নয়ন করবে বিজেপি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে পাহাড়কে আধুনিক পরিকাঠামোয় সাজানো হবে। চা বাগানের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ৩৫০ টাকা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিন পাহাড়ের তিনটি কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থীদেয় জয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ের তিন আসনে প্রার্থী দেয়নি তৃণমূল। তিনটি আসনই তারা ছেড়েছে গুরুংপন্থী মোর্চার জন্য। উলটো দিকে রয়েছে বিজেপি ও তামাং পন্থী মোর্চা।
এদিন নাগরাকাটাতেও সভা করেন অমিত শাহ। তিনি সেখানে বলেন দোসরা মে নির্বাচনে জিতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হবে। শিলিগুড়িতে আইটি পার্ক তৈরি করা হবে। এখানে চাকরি পাবেন রাজ্যের অগণিত ছেলে মেয়ে। চাকরির জন্য বেকার যুবকদের আর রাজ্যের বাইরে যেতে হবে না বলে আশ্বাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। আই টি পার্কের কাজ দোসরা মে-র পরেই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ।
এদিনু শাহ জানান, শিলিগুড়ির ভোলবদল করে দেবে বিজেপি। দোসরা মের পর শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে শিলিগুড়িতে মেট্রো তৈরি করা হবে। শাহের দাবি শিলিগুড়ি ও কলকাতার মধ্যে ৭০০ কিমির দূরত্ব। কিন্তু কোনও জাতীয় সড়ক নেই, অত্যন্ত দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিজেপি সরকার সেই অভাব মেটাবে। শিলিগুড়ি কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হবে, যার নাম হবে সুভাষ চন্দ্র বোস ন্যাশনাল হাইওয়ে।