টেট পাশ করেও মেলেনি চাকরি। প্রতিবাদে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সামনে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেট পাশ করেছেন। কিন্তু এখনও মেলেনি চাকরি। পর্ষদের দফতরের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়ে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। চ্যাঙদোলা করে বিক্ষোভকারীদের গাড়িতে তোলে পুলিশ। ৬০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট পাস ট্রেন্ড নট ইনক্লুডেড চাকুরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখান বিধাননগরের পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দফতরের সামনে। ১৬ হাজার চাকুরিপ্রার্থীর নিয়োগ করার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত চাকুরি না পাওয়ায়, তাঁরা আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা।
এদিন সকাল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সামনে দুটি দলে ভাগ হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেন চাকরিপ্রার্থীরা। একটি দল পর্ষদের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। হাততালি দিয়ে দিতে থাকেন স্লোগান। অপর দলটি একটু দূরে এগিয়ে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই মোতায়েন ছিল পুলিশ। পুলিশের তাড়া খেয়ে অনেক চাকরিপ্রার্থীকেই রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন বাড়ির গেট খুলে ঢুকে যেতে দেখা যায়। পুলিশের তাড়া খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান এক মহিলা চাকরিপ্রার্থীও। অপর দলটি ততক্ষণে পর্ষদের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পরে সব পুলিশ কর্মীরাই এদিকে নজর দেন।
এক বিক্ষোভকারী চাকরিপ্রার্থী বলেন, “২০১৪ সাল থেকে আমরা বঞ্চিত। আমাদের সকলেরই চাকরির প্রয়োজন। আমাদের সেই চাকরি দেওয়া হোক।”
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণদের শংসাপত্র দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এবার সেই শংসাপত্র পেতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণহীন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, সার্টিফিকেট না পাওয়ায় তাঁর মক্কেলরা অন্য রাজ্যে চাকরি করার আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা ছাড়া পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছে তাঁরা পাশ করেছেন, তাও জানা যাচ্ছে না।
বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চায়। প্রাথমিক টেটে সার্টিফিকেট না দিলে টাকা ফেরাতে বোর্ডের কী অবস্থান তা জানতে চেয়েছে আদালত। অর্থাৎ শংসাপত্র না দিলে পরীক্ষার্থীদের টেটের ফর্ম কেনার যে মূল্য তা ফেরত দেওয়া হবে কি, জানতে চাইল আদালত।
২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় পাশ করার পরেও শংসাপত্র পাননি প্রায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তও যেমন আছেন। তেমনই আছেন প্রশিক্ষণ ছাড়া পরীক্ষার্থীও। শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত বলেন, বোর্ডের সিদ্ধান্ত তারা কোনও প্রশিক্ষণহীনদের শংসাপত্র দেবে না।