দ্বিতীয় পর্ব
একটা সময় পর্যন্ত রাঢ় অঞ্চল ছাড়া বঙ্গের সাধারণ মানুষের নিকট মলুটী গাঁয়ের খুব একটা পরিচিতি ছিল না। তবুও ধর্মপ্রাণ মানুষজন বিশেষ একজনের জন্য এই গাঁয়ের খোঁজ জানতেন। তিনি হলেন বিখ্যাত তন্ত্রসাধক বামদেব বা বামাখ্যাপা। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বামদেব মলুটীতে আসেন এবং একটানা প্রায় দুবছর সেখানে ছিলেন। তাঁর প্রাথমিক সাধনসিদ্ধি মলুটীতে মা মৌলীক্ষার নিকট ঘটেছিল। পরবর্তীকালেও বামদেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মা মৌলীক্ষার টানে বিভিন্ন তন্ত্রসাধকদের মলুটীতে যাওয়া আসা ছিল। কিংবদন্তি আছে , কয়েকজনকে স্বয়ং বামদেব পাঠিয়েছিলেন মৌলীক্ষা মায়ের পাঠশালায় সাধনার প্রাথমিক ধাপ সম্পূর্ণ করার জন্য। যে কারণে সাধনা সিদ্ধির পীঠস্থান হিসেবে মলুটীর খ্যাতি ছিল।
গত পর্বে বলেছিলাম মলুটী কেমন করে মন্দিরময় হয়ে উঠল। সেখানে ১০৮ মন্দিরের মধ্যে ৩৬ টি একেবারে ধ্বংস হয়েগেলেও বাকি ৭২ টি মন্দির এখনো আছে , তার ধরনের কথা এবং তার মধ্যে ৫৭ টি চালা মন্দিরের ধরনের কথা। প্রসঙ্গত, যেসব মন্দির ধ্বংস হয়েছে এবং বাকি ৭২ টি মন্দিরের সবগুলোর প্রতিষ্ঠা ফলক যদি পাওয়া যেত তবে নানকার রাজবংশ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যেত। যে কটি মন্দিরের প্রতিষ্ঠা ফলক পাওয়া যায় তাতে জানা যায় যে মলুটীতে শেষ মন্দির স্থাপিত হয়েছিল ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে । এর থেকে অনুমান করা যায় সম্ভবত ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে থেকে রাজপরিবারের আর্থিক সমস্যা সূচিত হয়েছিল। হয়ত সেই জন্যই মন্দির নিৰ্মাণ বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্ষণাবেক্ষণও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। যার ফলে ওই ৩৬ টি মন্দির কালের করাল গ্রাসে শেষ হয়ে যায়।
৫৭ চালা মন্দির ব্যতীত, অলঙ্কারহীন মন্দিরগুলোর মধ্যে রাজার তরফে ৩ টি মন্দিরকে চালা মন্দিরের মধ্যে ধরা হলেও এগুলি ঠিক চালামন্দির নয়, আবার অন্যভাগে এদের স্থান দেওয়া যায় না। মন্দির তিনটি একই ভিত্তির উপর স্থাপিত হয়েছে। তিনটি মন্দিরের মধ্যে একটি ছয় কোনা। তার ছয় কোনা মন্দিরের চূড়াটি অনেকটা হীরকাকৃতি আদলে নির্মিত হয়েছে। অর্থাৎ, চালামন্দিরের ক্লাসিক্যাল নিয়মের সঙ্গে তা মেলে না। আবার বাকি দুই মন্দিরের প্রস্থছেদ বর্গাকার হলেও তাদের চালের খিলান সোজা। চালগুলির পার্শ্বরেখায় চালামন্দিরের কোমল নমনীয় বাঁক নেই। শীর্ষদেশ শঙ্কুর মতো একটি বিন্দুতে গিয়ে মিশেছে। তাই , এ দুটি অনেকটা নাগর রীতির হলেও সে ব্যাকরণ মানে নি।
রেখ বা শিখরদেউল নাগর রীতি প্রভাবিত উড়িষ্যার মন্দির বলে মনে করা হয়। উড়িষ্যাতেই রেখ দেউলের সংখ্যা সব থেকে বেশি। কিন্তু আঠারো উনিশ শতকে বাংলার সূত্রধর স্থপতিদের চিন্তাভাবনায় রেখদেউলের গঠন শৈলীতে যে পরিবর্তন বা অভিনবত্ব এসেছে তা বাংলার একান্তভাবেই নিজস্ব। মলুটীর একমাত্র রেখদেউলটি তে সেই অভিনবত্ব দেখা যায়।
এই মন্দিরের রেখদেউলের প্রধান তিনটি ভাগ আছে যথা – বাঢ় গণ্ডী মস্তক । এই তিন ভাগ দেখা গেলেও প্রতিটি ভাগের বৈশিষ্ট্যসূচক উপভাগগুলো অনুপস্থিত। রেখদেউলের গণ্ডী অংশটি সাধারণত বাঢ়ের থেকে উচ্চতায় অনেক বেশি হয়। রেখদেউল গণ্ডী অর্থাৎ আমলকের নীচ পর্যন্ত চূড়া এবং সাধারণ বাঢ় অর্থাৎ পাদপীঠ থেকে চূড়া। এখানে কিন্তু বাঢ় এবং গণ্ডী প্রায় সমান তো বটে, চোখের আন্দাজে বাঢ়কে যেন উচ্চতায় গণ্ডীয় গন্ডীর থেকে একটু বৃহৎ মনে হয়। মন্দিরটির পিষ্ট বা তলপত্তন থেকে গণ্ডী পর্যন্ত মসৃণ এবং গণ্ডী অংশটি খাঁজ কাটা। তলপত্তন অর্থাৎ যে বেদির উপর মন্দিরটি স্থাপিত। গন্ডীর ওপরে আমলকটি বেশ বড় হলেও উড়িষ্যার রেখদেউলের তুলনায় ছোটই বলা যায়। বাঢ় অংশে কোনো অলঙ্করণ নেই। তবে প্রবেশ দ্বারের দুইপাশের স্তম্ভ এবং দরজার মাথা থেকে গন্ডীর শুরু পর্যন্ত কারুকার্য মন্ডিত।
রাসমঞ্চ , তুলসীমঞ্চ এবং দোলমঞ্চকে মঞ্চশৈলীর মন্দির বলা হয়। রাসমঞ্চ আকারে অন্য দুটির চেয়ে বড় । উচ্চ বেদি বা মঞ্চের উপরের সর্বদিক উন্মুক্ত অষ্টকোনা এই মন্দিরগুলোতে ভক্তদের অবাধে বিগ্রহ দর্শনের সুবিধার জন্য উচ্চবেদি এবং সব দিক মুক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকত। বাংলার অধিকাংশ স্থানে রাসমঞ্চের প্রতিটি কোণের স্তম্ভের উপর একটি করে চূড়া ছাড়াও তার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে বড় চূড়া নিৰ্মাণ করা হতো। সব মিলিয়ে রাস মঞ্চগুলো ন- চূড়া হিসাবে নিৰ্মাণ করা হতো। কোথাও কোথাও সতের চূড়ার রাসমঞ্চ দেখতে পাওয়া যায়। কোনো কোনো স্থানে এই চূড়াগুলো শিখর মন্দিরের চূড়ার মতো হলেও বেশিরভাগ স্থানেই চূড়াগুলোর আকার হতো রসুনের মতো। সেই জন্য স্থানীয় স্থপতিরা এই চূড়াগুলোকে রসুনচূড়া বলতেন।
এধরনের মন্দিরে সারা বছর কোনো বিগ্রহ থাকত না। উৎসবের সময় নিকটের মন্দিরথেকে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ এনে সাময়িকভাবে রাসমঞ্চ বা দোলমঞ্চের মধ্যে রাখা হতো। উৎসব শেষে বিগ্রহকে পুনরায় তাঁদের মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো।
মলুটীতে একটিমাত্র মঞ্চশৈলীর মন্দির আছে এবং সেটি রাসমঞ্চ । তবে, এখন সেখানে কালী প্রতিমা পূজা হয় । মন্দিরের অর্ধ গোলাকৃতি খিলানগুলোর উপরের অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে আদৌ চূড়া ছিল কিনা এবং থাকলে কটি চূড়া ছিল কিংবা তাদের আকার কেমন ছিল তা জানতে পারা যায় না । খিলানের ওপরের অংশ না থাকায় প্রতিস্থা ফলক বা লিপিটিরও অস্তিত্ব নেই। কাজেই কোন সময় এই রাস মঞ্চ তৈরি হয়েছিল বা কে তৈরি করিয়েছিলেন তা নিশ্চিতভাবে জানার কোনো উপায় নেই । তবে শোনা যায় এটি নাকি রাজার তরফের কেউ স্থাপন করে ছিলেন।
প্রসঙ্গত বলে রাখি , মলুটীর একদম প্রথম দিকের কোন নানকার রাজা বা রাজপরিবারের বড় তরফের কেউ গুরু দন্ডীস্বামী বৈষ্ণবের নিকট দীক্ষা নিয়েছিলেন। সেই রাজাই হয়তো গুরু আজ্ঞায় রাধাকৃষ্ণের মন্দির ও রাসমঞ্চ নির্মাণ করিয়েছিলেন এবং দোল, রাস, রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেছিলেন ।
নানকার রাজবংশের প্রথম যুগের কোনো রাজার ওপর বৈষ্ণব প্রভাব পড়েছিল এবং সেই প্রভাব মলুটীর কালীপুজোর ওপরেও ছাপ ফেলেছিল। সম্ভবত এ ঘটনা ঘটেছিল যখন মলুটীর নানকার রাজপরিবারের #আদিকালী নামে একটিমাত্র কালীপুজো হতো এবং তখনও আরও সাতটি কালীপুজো সূচিত হয়নি। সেই সময় এবং তারও পরবর্তীকালে কালীপুজোয় পাাঁঠা ,ভেড়া বলির পর চালকুমড়া ও আখ বলি হয়।
এসব কিছু মলুটীর উপর বৈষ্ণব প্রভাবের কথা স্মরণ করাতে চায়। তবে মলুটীতে সে প্রভাব স্থায়ী হয়নি ।পরবর্তীকালে কোন সময় ,ঠিক কোন রাজার আমলে ,রাধাকৃষ্ণের মূর্তি অপসারিত হয় সেখানে কালী মূর্তি স্থাপিত হয়েছিল সে কথা বলা কঠিন । এখানে রথের বিসর্জন হয় বাবুলপুকুরে।
যাক , তারাপদ সাঁতরা বলেছেন ,
“পশ্চিমবাংলার গ্রামাঞ্চলে খড়ে ছাওয়া দোচালা রীতির সাধারন কুটির অজস্র দেখতে পাওয়া যায় । তবে দোচালা রীতির যথার্থ নিদর্শন পাওয়া যায় সেকালের দুর্গাপূজা স্থান হিসেবে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের চণ্ডীমণ্ডপ স্থাপত্যের মধ্যে । তখনকার সূত্রধর মিস্ত্রিদেরকৃত এই খড়ের ছাওয়া বাঁকানো চালের চণ্ডীমণ্ডপকে বলা হতো #লাটাকুমারী । …. দোচালা কুঁড়ে ঘরের এই আদলটিকে অনুসরণ করে সেইভাবেই রূপ দিয়েছিলেন দোচালা মন্দির নির্মাণে। অন্যদিকে এ শৈলীর মন্দিরকে #একবাংলা মন্দির হিসাবে নামকরণও করা হয়েছে।
…এই রীতির মন্দিরের আয়তকার কুঠুরিযুক্ত চার দেওয়ালের দুপাশে কারিগরি দক্ষতায় আয়তাকার দুটি আচ্ছাদন চাল নেমে আসে । কোথাও দেখা যায়, আয়তাকার সে চাল দুটির কার্নিশ ধনুকের মতো বাঁকানো। ফলে, মন্দিরের উপরের দুটি চালার সংযোগস্থলও রূপ নেয় ঠিক হাতির পিঠের মতো বাঁকানো ধরনের। এছাড়া এই একবাংলা রীতির মন্দিরগুলির ভিত্তিভূমি আয়তকার হলেও সেগুলির প্রবেশপথ কোথাও একদুয়ারি, আবার কোথাও বা দুই স্তম্ভ বিশিষ্ট ত্রিখিলানযুক্ত। “
মলুটীর একমাত্র একবাংলা মন্দিরটি হল গ্রামের দক্ষিণপ্রান্তে মা মৌলীক্ষার মন্দির। এই একবাংলা শৈলীর একটি আদর্শ নমুনা হিসাবে ধরা হয় । সামনের ছোট অলিন্দ ত্রিখিলানযুক্ত।অলিন্দের পরে আয়তাকার কক্ষটি মন্দিরের গর্ভগৃহ। গর্ভগৃহের একটি প্রবেশপথ । কক্ষের মধ্যে আলো হাওয়া প্রবেশের জন্য পরবর্তীকালে উত্তর ও দক্ষিণের দেওয়াল কেটে জানলা বসানো হয়। মন্দিরের উপর নকশা কাটা একটি বৃহৎ ত্রিশূল আছে।
এক কালে মন্দিরের সামনের দিক টেরাকোটার ফলকে অলংকৃত ছিল । কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তায় সম্পূর্ণ মন্দিরটি সিমেন্ট, প্লাস্টার করার ফলে কয়েকটি জায়গা ছাড়া সেই অপূর্ব কাজ আর চোখে পড়ে না । গর্ভগৃহের ভিতরে এক ফুট উঁচু বেদির উপর মা মৌলীক্ষার অবস্থান। তাঁর মূর্তি বলতে কেবল রূপার চোখ বসানো অপরূপ সুন্দর এক দেবীর মুখ। মুখে তাঁর প্রসন্ন মৃদু হাঁসি।
সমতল ছাদের দালান রীতি উনবিংশ শতাব্দীর বাংলায় খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। তার অন্যতম প্রধান কারণ অনুমান এই ধরনের মন্দিরের খুব সাধারণ গঠন প্রণালী।তিনদিক ঢাকা আয়তকার মন্দিরের সামনের বারান্দায় অর্ধ গোলাকৃতি তিনটি খিলানে দেখা যায় ।প্রস্থ বেশি হলে ছাদ রাখার জন্য স্তম্ভের ব্যবহার দুর্লভ নয় । এই শৈলীর মন্দিরের সামনের দিকে অথবা ত্রিখিলানের ওপরে ও দুপাশে পঙ্খের অলংকরণ দেখা যেত। বাংলার কোথাও কোথাও দোতলা দালান রীতির মন্দিরও গড়ে উঠেছিল ।
মলুটীতে সমতল ছাদের মন্দির আছে বারোটি। প্রতিটি একতলা। এইসব মন্দিরে দুর্গা ,কালী, নারায়ন প্রভৃতি দেবদেবীর পুজো হয়। এরমধ্যে একটি ভগ্নপ্রায় দুর্গা মন্দিরের ছাদের নিচে একসারি মানুষের মুখ দেখা যায়। কাদের মুখ বোঝা যায় না! মন্দিরের ছাদ ভেঙে গেলেও সামনের আলসের মাঝখানে দুটি পরী আর তার দুপাশে দুটি বাঘের মূর্তি দেখতে পাওয়া যায় । এই পরী এবং বাঘের মূর্তি দেখে মনে হয় বাংলার অন্যান্য বহু জমিদার পরিবারের রাজবংশ একসময় মিশ্র সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছিল ।
মলুটীর পুরনো মন্দির গুলির বেশিরভাগই পাতলা
ছোট ইঁট দিয়ে তৈরি। এই ইঁটগুলি এখনকার মতো কাঠের বাক্সে কাদামাটি ইউরোপীয় কায়দায় তৈরি হতো না । বাংলার সাবেকি পদ্ধতিতে এইসব মন্দিরের ইঁট নির্মিত হয়েছিল। এই কাজে সাধারণত চিকন পলিমাটি ব্যবহার করা হলেও সব জায়গায় তা মিলত না। তবে যে মাটিই ব্যবহার করা হোক প্রথমে তা থেকে কাঁকর , ঘুটিঙ প্রভৃতি বেছে ফেলে দেওয়া হতো ।তারপর মাটিকে জলে ভিজিয়ে ক্রমাগত ওলোটপালট করে শক্ত কাদায় পরিণত করা হতো ।অনেক সময় মাটি কে বারবার পায়ে দলে ত্রিফলার জলে তিনমাস ভিজিয়ে রাখা হতো।
এরপর ঘাসপাতা ও কাঁকর বিহিনী পরিষ্কার সমতল প্রাঙ্গণে ওই কাদাকে মোটা করে বিছিয়ে কাঠের বড় #পিটনা দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে সমান করা হতো।এবার যে মাপে ইঁট কাটা হবে সেই অনুযায়ী কাদার ওপরে ওপরে লম্বায় ও চওড়ায় দাগ দেওয়া হতো। লম্বা সরু বাঁশের ডগায় পাতলা ধারালো ছুরি দিয়ে ওই দাগ বরাবর ইঁট কাটা হতো। রোদে শুকিয়ে একটু সাবধানে ইঁট গুলোকে উল্টে দেওয়া হতো ভালোভাবে শুকিয়ে যাবার জন্য।
পুরো শুকিয়ে যাবার পর ইঁটগুলোকে কয়েতবেল অথবা তেঁতুল কাঠে ইঁট পোড়ানো হত। বলা হত , ওই দুই কাঠে পোড়ালে ইঁটে নোনা লাগে না।
টেরাকোটার ফলক নির্মাণের সময় কাদার স্তর একটু পাতলা রাখা হতো। আধ শুকনো মাটির ফলকে খোদাইয়ের কাজ শেষ হলে সেগুলিকে একইভাবে পুড়িয়ে নেওয়া হতো।
#ক্রমশঃ
©দুর্গেশনন্দিনী
তথ্যঃ ১) মলুটির টেরাকোটার মন্দির
২) মন্দিরময় মলুটী