সামনেই বিধানসভা ভোট। আর এই ভোটের আগে একের পর এক বেসুরো তৃণমূল বিধায়ক। গত কয়েকদিন আগেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবার সকালে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তালিকায় আরও রয়েছে! নাম না করে সবার জন্যে বিজেপির দরজা খোলা রয়েছে বলে মন্তব্য শুভেন্দুর অধিকারীর।
উল্লেখ্য, বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের পর হুগলির চন্দননগরে জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রথমে তালডাঙা মোড় থেকে সার্কাস ময়দান পর্যন্ত পদযাত্রা ছিল। শুভেন্দুর এই মিছিলে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের ভিড় ছিল। কৃষক সুরক্ষা অভিযানের নামে এই কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। পদযাত্রা শেষে জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই এহেন মন্তব্য শুভেন্দুর।
সভা থেকে এদিন সমস্ত বেসুরো তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বলেন, তৃণমূল পাইভেট কোম্পানিতে থাকতে হলে কর্মচারী হয়েই থেকে যেতে হবে। তবে সহযোদ্ধা কিংবা সহকর্মী হিসাবে যদি থাকতে চান তাহলে অবশ্যই বিজেপিতে আসুন। তবে রাজীব কিংবা প্রবীর ঘোষালরা বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা সেই বিষয়ে কিছু স্পষ্ট ভাবে জানাননি নন্দীগ্রামের প্রাক্তন এই বিধায়ক।
শুভেন্দুর পাশাপাশি হুগলির সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ও এদিন শুভেন্দুর সঙ্গে একসুরে সুর মেলান। তিনি বলেন, প্রবীরবাবু ভদ্র মানুষ। তাঁকে মানুষ ভালোবাসে বলেই ভোট দিয়েছেন। এখন কাজ করতে পারছেন না। প্রবীরবাবুর মতো সমস্ত ভদ্রলোকের জন্যে বিজেপির রাস্তা খোলা আছে বলে মন্তব্য লকেট চট্টোপাধ্যায়ের।
উল্লেখ্য, আজ ফের মুখ খুলেছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তাঁরই দলের নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে তাঁকে পরিকল্পনা করে হারানো চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন প্রবীরবাবু। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাস্তার কাজ ফেলে রাখা হয়েছে, তাঁকে হারানোর চেষ্টা করছেন দলেরই নেতা, ভোটের মুখে এমনই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। যা নিয়ে চরম অস্বস্তি তৃণমূলের।
এভাবে দলেরই নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেললেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। উত্তরপাড়া বিধানসভার অন্তর্গত কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের প্রধান আচ্ছেলাল যাদব।
প্রবীর ঘোষালের অভিযোগ, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তা তৈরির কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। ওই রাস্তায় হেঁটে যাওয়াও কষ্টের, গাড়ি চলা তো দূরের কথা। রাস্তার হাল নিয়ে দিদিকে বলো, দুয়ারে সরকার থেকে শুরু করে সব জায়গায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি।’’
প্রবীরবাবু আরও বলেছেন, ‘‘কোথাও কিছু বলে কাজ না হওয়ায় এবার বিরক্ত হয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি। দলেরই অনেকে আমাকে বলছেন, আমাকে হারানোর জন্যই নাকি রাস্তার কাজ ফেলে রাখা হচ্ছে।’’
প্রবীর বাবুর মতো একই ভাবে গত কয়েকদিন ধরেই বেসুরো বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। যা নিয়ে অস্বস্তি বহাল তৃণমূলে। রাজীব-প্রবীর ঘোষাল ছাড়াও তালিকায় আরও রয়েছে। তাঁদের সবাইকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান শুভেন্দু অধিকারীর।