রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আপাতত আয়ত্তে। সেই কারণে এর মধ্যেই উপনির্বাচন করানোর জন্য একাধিকবার নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল (TMC)। আবেদন মেনে আগামী ৯ আগস্ট রাজ্যসভার একটি আসনে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বাকি রাজ্যসভা ও বিধানসভার আসনগুলিতে দ্রুত নির্বাচন করানোর দাবি তুলেছে শাসকদল। আর রাজ্য সরকারের এই আবেদনকেই কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। শুক্রবার বিধানসভায় PAC বৈঠকের পর বেরিয়ে তিনি বলেন, ”রাজ্যে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ জারি রয়েছে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। নাইট কারফিউ রয়েছে। এই অবস্থায় কেন এখনই উপনির্বাচনের দাবি উঠছে?” তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, উপনির্বাচন নিয়ে ঠিক যতটা তৎপর শাসকদল, ততটাই উদাসীন বিরোধীরা।
করোনা কালেই (Coronavirus) বিভিন্ন জায়গায় ভোট পর্ব মিটেছে। রাজ্যের মোট ২ রাজ্যসভার আসন এবং ৮ বিধানসভা আসনে পুনর্নির্বাচন হওয়ার কথা। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পুনর্নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়, এমনই মনে করে রাজ্যের শাসকদল। তাই সম্প্রতি সেই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরই নির্বাচন কমিশনের দ্রুত পুনর্নির্বাচনের আরজি জানান শাসকদলের নেতারা। আগামী মাসের মধ্যে এই পর্ব মেটানোর একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এতে আপত্তি রয়েছে। শুক্রবার বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তা তুলে ধরলেন তিনি। বললেন, ”প্রতিটি জায়গাতেই ভোটের আগে করোনা পরিস্থিতির বিবেচনা করা হচ্ছে। এ রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা তো ঠিক নয়। উন্নতি হলে কেন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে এখনও বিধিনিষেধ রয়েছে? আর রাজনৈতিক সভা ছাড়া কীভাবেই বা পুনর্নির্বাচন হবে?” তাঁর আরও যুক্তি, কেন্দ্র কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। তাই সে কথা মাথায় রেখে এখন উপনির্বাচন করা মানে বিপদ ডেকে আনা। রাজ্য সরকার যেন তা মাথায় রাখেন।
উপনির্বাচন (By Election) নিয়ে আপত্তি তলার পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা একদিন দলত্যাগ আইন নিয়ে সরব হন। মুকুল রায় ইস্যুতেই যে শুভেন্দুর এই পদক্ষেপ, তা বুঝতে বাকি নেই কারও। তাঁর অভিযোগ, গত ১০ বছর ধরে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়নি রাজ্যে। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তা দ্রুত কার্যকর করার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সূত্রের খবর, এই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বিধানসভায় অধ্যক্ষের ঘরে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। তাতে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু মুকুল রায় এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরসঙ্গী হিসেবে দিল্লিতে। আজ সন্ধেবেলা ফিরবেন। তাই তিনি শুনানিতে হাজির ছিলেন না। ১৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানি।