রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই কোনও না কোনও ইস্যু নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন জগদীপ ধনখড়। সবথেকে বেশী সংঘাত হয়েছে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে। এবার সেই সংঘাত আরও একটু বাড়ালেন স্বয়ং রাজ্যপাল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে যাওয়া প্রতিনিধি মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফের কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারকে দুষলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সোমবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ে সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কথামতো সোমবার বিকেলে চারটে নাগাদ বিধানসভা থেকে পায়ে হেঁটে রাজ ভবনে যায় বিজেপির প্রতিনিধি মণ্ডল। সেখানে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে চা-চক্রে যোগ দেন তাঁরা। বর্তমানে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এবং বিরোধীদলের কর্মী-সমর্থকদের উপর অমানবিয় অত্যাচার হচ্ছে, সেই কথা আবারও রাজ্যপালের কানে তুলে ধরেন শুভেন্দুরা।
বিজেপির প্রতিনিধি মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁদের নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আর সেখান থেকেই তিনি আবারও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সাংবাদিকদের সামনে বলেন, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় যেসব জায়গায় অত্যাচার চলেছে, মুখ্যমন্ত্রী সেখানে কেন যাননি? তিনি রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘রাজ্যে গণতন্ত্র নিঃশ্বাস নিতে পারছে না।” রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন রাজ্যপাল
জগদীপ ধনখড় আবারও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে বলেন, ‘উর্দিধারীদের নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছেন না। তাঁরা শাসক দলের অত্যাচারকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।” উল্লেখ্য, রাজ্যপাল আর রাজ্য সরকারের মধুর সম্পর্ক ধনখড়ের আমলে দেখা যায়নি। বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যপাল যেমন সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন, তেমনই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও রাজ্যপালকে বিজেপির ‘দালাল” বলে আখ্যা দিয়ে ওনার অপসারণ চেয়েছেন।
মাস খানেক আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কোচবিহার এবং মেদিনীপুর সফরে গিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের সাঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে সেই সাক্ষাৎ নিয়েও কটাক্ষ করা হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম সফরের পর রাজ্যপাল বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘আমাকে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বাধ্য করবেন না।” রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পর তৃণমূল কংগ্রেস ওনার বিরুদ্ধে আরও তেঁতে উঠেছিল।