“১৩ বছর পর নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়েছে ?” এভাবেই নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। মঙ্গলবার তেখালি স্কুল মাঠে জনসভা থেকে কার্যত তৃণমূল (TMC) ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। ৩১ অক্টোবর বিজয়া সম্মেলন করতে গিয়ে নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে দেন তিনি। তারই পাল্টা হাজরাকাটায় ফিরহাদ হাকিম, পূর্ণেন্দু বসু, দোলা সেন ও অখিল গিরিকে নিয়ে পাল্টা সভার কথা ঘোষণা করে দেয় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। সেদিন বিকেল তিনটে সেই সভায় বক্তৃতা করবেন তৃণমূলের কলকাতার নেতারা। নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, “১৩ বছর পর নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়েছে ? ভোটের আগে আসছেন ভোটের পরে আসবেন তো ? ৭ জানুয়ারি সকালে সূর্যোদয়ের আগে এসে পৌঁছাতে পারবেন তো ?” এমনই এক ঝাঁক অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। তবে নন্দীগ্রামে এদিন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
বাংলা রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতে ইঙ্গিত দেবেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু নিজেই ঘোষণা করে দেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির এই পবিত্র মঞ্চ থেকে কোনওরকম রাজনৈতিক বক্তৃতা করব না। নন্দীগ্রামে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শনি নন্দীগ্রামে আসি তখনই পরবর্তী কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে যাই। ৩১ অক্টোবর বিজয়া সম্মেলনীতে এসে এদিনের সমাবেশে আসার কথা ঘোষণা করে গিয়েছিলাম। নন্দীগ্রামে আস্তে আমার কোনো বাধা নেই। চেনা বামুনের পইতে লাগে না।” নিজের আগামী রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে পরিবহনমন্ত্রী বলেছেন, “আমি কোন পথে চলব, তা আমি রাজনৈতিক মঞ্চ থেকেই বলবো।” এদিন নিজের বক্তৃতা শেষ করার আগে, এমন শুভেন্দুর গলায় শোনা গিয়েছে জয় বাংলা স্লোগান! তেমনই শোনা গিয়েছে ‘ভারত মাতার জয়’ স্লোগানও।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ২৩ জুলাই কমিটি ঘোষণার পর থেকে দূরত্ব বাড়ছে শুভেন্দু অধিকারীর। সেই থেকে রাজ্য সরকারের কোন ক্যাবিনেট বৈঠকসহ তৃণমূল নেতৃত্বের সাংগঠনিক বৈঠক দেখা যায়নি তাঁকে। যোগ্য ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের লোকসভা থেকে নির্বাচিত সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী ছিলেন দাদা শুভেন্দুর মঞ্চের। পাশাপাশি ছিলেন পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক ফিরোজা বিবি, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে ও ময়নার বিধায়ক ভূষণ দলুই। কার্যত এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করলে নন্দীগ্রামের বিধায়ক।