কখনও বাগনান, কখনও উলুবেড়িয়া। এলাকা বদলের পাশাপাশি বাড়িও বদল করত মামুনুর রশিদ ও মহম্মদ শাহিন আলম ওরফে আলামিন। বাংলাদেশের বাসিন্দা মামুনুর ও আলামিনকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) অনুপ্রাণিত বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি-র সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অন্য দু’জনের মধ্যে রয়েছে মহম্মদ জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন এবং রবিউল ইসলাম। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, গত মঙ্গলবার শিয়ালদা স্টেশনের পার্কিং এরিয়া থেকে মহসিন ও মামুনুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দু’জনকে জেরা করে পুলিশ আরও দু’জনের খোঁজ পায়। হাওড়া স্টেশন থেকে আলামিন ও রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। মহসিন, মামুনুর ও আলামিন বাংলাদেশের বাসিন্দা। রবিউল বীরভূমের নয়াগ্রামের বাসিন্দা।
মামুনুর ও আলামিন বাংলাদেশ থেকে কবে কলকাতায় এসেছিল তার সঠিক তথ্য নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, বাগনানে বেশ কিছুদিন ভাড়া ছিল এই দু’জন। সেখান থেকে তারা বাড়ি ভাড়া নেয় উলুবেড়িয়ায়। রাজাপুর থানার লায়েকপাড়ায় একটি বাড়িতে শেষ ভাড়া ছিল মামুনুর ও আলামিন। বাড়ির মালিক সিরাজুল মল্লিক জানিয়েছেন, ২৪০০ টাকায় তিনটে ঘর ভাড়া নিয়েছিল তারা। তাঁর দাবি, ‘‘আধার কার্ড, ভোটার কার্ড দেখিয়েই বাড়ি ভাড়া নেয় দু’জনে। পরে জানতে পারি সেগুলো জাল। আগে যদি জানতে পারতাম ওরা জঙ্গি, তাহলে পুলিশে ধরিয়ে দিতাম।‘’
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাড়ায় পাড়ায় বাচ্চাদের খেলনা ফেরি করে বেড়াত মামুনুর ও আলামিন। তাদের হাবভাবে কখনও সন্দেহ হয়নি এলাকাবাসীর। তবে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইল-সহ জিহাদ সংক্রান্ত প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মোবাইল ঘেঁটে প্রচুর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে বলে খবর। পুলিশের সন্দেহ, ধৃতেরা নব্য জেএমবি-র সক্রিয় সদস্য। ইসলামিক স্টেটের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে নতুন করে ঘাঁটি তৈরি করাই উদ্দেশ্য জেএমবি-র। এই সংগঠনকে প্রত্যক্ষ ভাবে মদত দিচ্ছে আইএস।