দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফের রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত রাজ্য সরকারের। এ বার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্তাদের গড় হাজিরার জন্য ভেস্তে গেল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জগদীপ ধনকড়ের ডাকা উত্তর চব্বিশ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠক।
এ দিন উত্তর চব্বিশ পরগনার ধামাখালিতে জেলাপরিষদের প্রশাসনিক ভবনে জেলার সমস্ত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই বৈঠকই হল না। এলেন না কেউই। এর পরই সরকারের বিরুদ্ধে আরও একবার ক্ষোভ উগরে গিয়েছেন ধনকড়। তিনি জানিয়েছেন, “১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসনকে বৈঠকের কথা জানানো হয়। ২১ অক্টোবর একটি চিঠি দেন জেলাশাসক। ২১-২৩ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ সফরে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সব সিনিয়র অফিসাররা উত্তরবঙ্গে।” তোপ দেগে রাজ্যপাল আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে যেতেই পারেন কিন্তু তার জন্য সরকার ছুটিতে চলে যেতে পারে না।” সুর চড়িয়ে রাজ্যপাল আরও বলেন, রাজ্যপাল কারও সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন, এর জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি লাগবে? রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের অধস্তন নন।”
সকাল সাড়ে ন’টায় বৈঠক শুরুর সময় ছিল রাজ্যপালের। যথাসময়ে ধামাখালিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু এলেন না কেউ। এ দিনই রাজ্যপালের বৈঠক রয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। উত্তরের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ধনকড়।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর একই ঘটনা ঘটেছিল শিলিগুড়িতে। কোনও মন্ত্রী বা শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হননি রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে। উপস্থিত ছিলেন না পুলিশ কর্তারাও। উত্তরবঙ্গে গিয়ে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্তা, বিরোধী দলের নেতাদেরও। কিন্তু সরকারি দলের জনপ্রতিনিধি আর আমলা-পুলিশ ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন বৈঠকে। প্রশাসনের মাথাদের বৈঠকে গড় হাজিরা নিয়ে রাজ্যপালের সরস মন্তব্য, “হয়তো স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী গৌতম দেব, পুলিশ কর্তা—সবার একসঙ্গে কাজ পড়ে গিয়েছে। তাই আসতে পারেননি। পরের বার নিশ্চয়ই তাঁরা আসবেন!”
“আমি কপিবুক রাজ্যপাল। সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করব বলে শপথ নিয়েছি। আমি রাজনৈতিক সার্কাসের লোক নই। সংবিধানের লোক। আমি জাত, ধর্ম, রং, দল দেখিনা। কারণ সংবিধানই আমার কাছে সব। আমি সেটাই দেখি। সেটাই দেখব।” এর মাঝে কার্নিভাল নিয়েও সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এ দিন ফের তোপ দাগলেন প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে।