বাস ভাড়া বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবিতে চলতি মাসের শেষ দিকে টানা ৩ দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বেসরকারি বাস মালিকদের পাঁচটি সংগঠন। এই বাস ধর্মঘট ঠেকাতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এই পরিস্থিতিতে বাস মালিকদের বৈঠকে ডাকলেন রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ, রবিবার দুপুর তিনটেয় ময়দান টেন্টে বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন বাস মালিকরা৷ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে সেই বৈঠকে রাজ্য সরকারের তরফে বাস মালিকদের বলা হবে ধর্মঘটের পথে না যেতে।
ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভাড়ার পুনর্বিন্যাসের দাবিতে টানা তিন দিন রাজ্যজুড়ে বাস মিনিবাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বেসরকারি বাস মালিকদের পাঁচটি সংগঠন৷ আগামী ২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি রাজ্য জুড়েই এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ মঙ্গলবার বাস মালিকদের সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হয়৷
বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে অনেক দিন ধরেই সরব বেসরকারি বাস মিনিবাসের মালিকরা৷ তাঁদের অভিযোগ, ডিজেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে বাস চালিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের৷ লকডাউনের পর রাজ্য সরকারের তরফে বেসরকারি বাস মিনিবাসের বর্তমান ভাড়ার হার খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য সরকার৷ কিন্তু সেই কমিটির রিপোর্টও এখনও জমা পড়েনি বলে অভিযোগ৷
বাস মালিকদের দাবি, অবিলম্বে বাস ভাড়া পুনর্বিন্যাস করতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও ডিজেলের দামের উপরে জিএসটি বসানোর দাবি করা হয়েছে৷ জিএসটি বসালে পেট্রোল- ডিজেলের দাম কমলে তাঁদের সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে বলে আশাবাদী বাস মালিকরা৷ তাঁদের বক্তব্য, পেট্রল-ডিজেলের উপর কেন্দ্র এবং রাজ্য যদি একটু করে ট্যাক্সে ছাড় দিত, তাহলেই তেল কিনতে তাঁদের নাভিশ্বাস উঠত না। আসলে বিশ্ব বাজারে যত দাম বাড়বে পেট্রল-ডিজেলের, তত ট্যাক্সও বাড়বে দুই সরকারের। এরপর ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে আর কোনও কিছুই করবে না সরকার। সে কারণে আগামী ২৯, ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি বাস ও মিনিবাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পাঁচটি সংগঠন।
তবে সাধারণ যাত্রীদের দাবি, বাস মালিকরাও ভোটের সুযোগ নিয়ে এখন সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। তাঁদের কথায়, “ডিজেলের দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বাসের ভাড়াও তো প্রতি ধাপে তিন টাকা, চার টাকা করে কন্ডাক্টররা বাড়িয়েই নিয়েছেন লকডাউনের পর থেকে। যত খুশি যাত্রীও তোলা হচ্ছে। তা হলে কেন প্রায়দিনই এই ধর্মঘটের হুমকি দেওয়া!”