পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য সরকারগুলি। তেমনই নির্দেশ দিল দেশের সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Courtourt)। সম্প্রতি আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব দেশের শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশন ফাইল করেন। সেখানে পিটিশনে তিনি আবেদন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের উচিত কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া যাতে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়। আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, “এটা আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় নয়। কারণ, কোথায় কত পরিযায়ী শ্রমিক হাঁটছেন, সেটা আদালত নজরে রাখতে পারবে না। এটা রাজ্যগুলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। কাউকে হেঁটে ফিরতে দেওয়া হবে কিনা, যাঁরা হাঁটছেন তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা হচ্ছে কিনা প্রভৃতি বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। কেউ রেললাইনে ঘুমিয়ে পড়েছেন কিনা, সেটা কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট নজর রাখতে পারবে।”
আবেদনকারী আইনজীবীকেও বিচারকের তীব্র ভৎসনা মুখে পড়তে হয়। খবরের কাগজ পড়ে ওই আইনজীবী এই আবেদন করেছেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। সুদানি পর্বে এই আবেদন প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেছেন, “প্রত্যেক আইনজীবী খবরের কাগজ পড়ে সেখান থেকেই সব বিষয়ে জ্ঞানী হয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের জ্ঞান ওই খবরের কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই রাজ্যগুলিকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। এতে আদালতের কিছু শোনার বা বলার নেই। আমরা আপনাকে বিশেষ পাস দেব। গোটা দেশ ঘুরে সরকারের নির্দেশ কার্যকর করতে পারবেন?”
প্রসঙ্গত, লকডাউন পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrent Labours) মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে ভিন রাজ্য থেকে নিজ রাজ্যে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদের কেউ কেউ খাদ্য ও জলের অভাবে রাস্তায় প্রাণ ত্যাগ করেছেন। মহারাষ্ট্রের অরঙ্গাবাদ পরিযায়ী শ্রমিকরা কাটা পড়েছে ট্রেনে। ১৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর পর সরকারপক্ষ তাদের ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। তারপর এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজগৃহে ফেরাতে কি উদ্যোগী হতে পারে না কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারগুলি? পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, ভারতীয় রেল ও রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হয়েছে। কিন্তু তাতেও পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরা শ্রমিকদের সংখ্যা কমানো যায়নি। পথেই যাতে তাদের খাদ্যের অভাবে মৃত্যু না হয় সেই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেই দেখতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।