দ্য ওয়াল ব্যুরো: মূর্তি ভাঙার পিছনে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী অভিষেক মিশ্রের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ তুলল বিজেপি। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতা উত্তর লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা বলেন, “মূর্তি ভাঙার কলঙ্কজনক কাজ যে বা যারা করেছে তারাই মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে লম্বা চওড়া কথা বলেছেন।” বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে তাঁর দাবি, যে পড়ুয়ার মাথা ফেটেছে সে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। নাম স্বর্ণালী। তিনি আবার অপর আহত যুবকের স্ত্রী বলেও দাবি রাহুলের। যদিও মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সামনে মাথায় চোট পাওয়া ছাত্রী নিজের নাম বলেন, মনীষা।
অমিত শাহর রোড শো নয়, তাকে কেন্দ্র করে বিদ্যাসগরের মূর্তি ভাঙা নিয়েই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। আর সেই উত্তাপের মধ্যেই নতুন অভিযোগ তুলল রাজ্য বিজেপি। প্রথম থেকেই এই ঘটনার জন্য আঙুল উঠেছে বিজেপির দিকে। এ নিয়ে যে গেরুয়া বাহিনী যে অস্বস্তিতে তার প্রমাণ দিয়ে এদিন সকালেই সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সভাপতি অমিত শাহ। এর পরেও রাজ্য সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহা।
মঙ্গলবার রাহুল সিনহা সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ কয়েকটি ছবি দেখান। তিনি বলেন, হাত ভাঙা অবস্থায় যাঁকে দেখা যাচ্ছে তাঁর নাম অভিষেক মিশ্র। রাহুলের দাবি, “ওই যুবক বিদ্যাসাগর কলেজের কেউ নন। তিনি প্রাক্তন ছাত্র। কিন্তু হিংসার সময়ে কলেজে ছিলেন।” এর পরেই রাহুলের প্রশ্ন, প্রাক্তন ছাত্র সেই সময়ে কলেজের ভিতরে কী করছিলেন?
এদিন রাহুল সিনহা পুরনো সংবাদপত্রের খবর উদ্ধৃত করে ওই যুবকের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগও তোলেন। তিনি বলেন, “২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর একটি ইংরাজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, অভিষেক মিশ্র এক ছাত্রীর থেকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। পরে ভর্তি করাতে না পেরে মেয়েটিকে ডেকে টিএমসিপি-র অফিস রুমে মেয়েটির সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। সঙ্গে ছিল কৌশিক ও মানস নামে আরও দু’জন। শুধু অশালীন আচরণই নয়, মেয়েটির থেকে টাকা চাওয়া হয়। এর পরে দুর্গা পুজোর পঞ্চমীর দিনে মেয়েটি আত্মহত্যা করে।”
রাহুল সিনহার অভিযোগ, অভিষেক মিশ্র নামে ওই যুবকই দলবল নিয়ে মূর্তি ভাঙে। এ নিয়ে মঙ্গলবারই পুলিশ একটি রিপোর্ট দেয় বলে রাহুল সিনহার দাবি। তিনি বলেন, “পরে পুলিশ কমিশনারকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে রিপোর্ট বাতিল করানো হয়। মমতা জানান, ওই পুলিশের বিবৃতি আমাদের নয়।” রাহুল সিনহার অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার শাসকদলের চাপে আসল বিবৃতি আড়াল করেছেন।
রাহুল সিংহের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ গল্প বলেই দাবি করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যে এদিন বলেন, “অনেক বার ভোটে হেরেছেন রাহুল সিনহা। রেকর্ড গড়েছেন। এবারেও হারবেন। এখন যা বলছেন তার পরে ওনার রাজনীতি ছেড়ে গল্প লেখা উচিত। তাতে উনি সফল হবেন।”