মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি! ফের বিক্ষোভে এসএসসি মেধাতালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা, অনশন চলছে ১৪৪ দিন

মেধাতালিকাভুক্ত হওয়া সত্বেও মেলেনি চাকরি। তাই আবারও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন মেধাতালিকাভুক্ত নবম-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষকপদের বঞ্চিত পরীক্ষার্থীরা। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি পূরণ না হওয়ার অভিযোগে এর আগেও অনশন ধর্মঘট করেছেন তাঁরা। কিন্তু তখন মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের দেন সমস্যা সমাধানের। তবে আশ্বাস ২ বছর পরেও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এবার নির্জলা উপবাস করে আন্দোলন করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এই দাবি পূরণের জন্য স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিতেও তারা দ্বিধা করবেন না বলে জানিয়েছেন।

প্রতি বছরের মত ২০১৬ সালেও পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন দ্বারা ৯২ হাজার স্কুলের নবম- দ্বাদশ স্তরের জন্য শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। কিন্তু পরীক্ষার স্বচ্ছ মেধা তালিকা ও নম্বর প্রকাশ না করে ১:১:৪ অনুপাতে ডাকার গেজেট লঙ্ঘনকরে বেআইনি ভাবে পেছনের সারিতে থাকা প্রার্থীদের প্রথম ধাপে ডাকা হয় বলে অভিযোগ। শিক্ষক নিয়োগে এই দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় ৪৫০ জন প্রার্থী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন ধর্মঘট করেছিল দু’বছর আগে। কলকাতার প্রেস ক্লাবের সামনে ২০১৯ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি সেই ধর্মঘট শুরু হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মেধাতালিকাভুক্ত সকল প্রার্থীদের চাকরি সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলে ২৯ দিন পর সেই আন্দোলনে ইতি টানা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এক ধাপও এগোয়নি। বঞ্চিত পরিক্ষার্থীদের অভিযোগ, লকডাউন চলাকালীন অকৃতকার্যদের টাকার বিনিময়ে এসএমএস এর মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সমস্যা সমাধানের জন্য যে পাঁচজনকে কমিশনের সাথে বৈঠক করতে বলেন, তাদের একাংশ কমিশনের সাথে সমঝোতা করে এই বেআইনি কাজ করেছে বলেও তাদের অভিযোগ।

এর প্রতিবাদে গত ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে আবার ধর্ণায় বসেছেন বঞ্চিত প্রায় ৩৫০ প্রার্থী। সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক ৫ নম্বর গেটের কাছে দীর্ঘ ১৪৪ দিন ধরে রিলে অনশন ও অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আশ্বাস পাননি। লকডাউন এবং অতিমারির কারণে সীমিত সংখ্যা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। লকডাউন শেষ হলে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়বে ও পরিধিও বাড়বে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত প্রার্থী পার্থ প্রতিম মন্ডল।

আন্দোলনে সামিল বনশ্রী হালদার, চন্দন প্রধান, সুদীপ মণ্ডল, ইলিয়াস বিশ্বাস, জয়দেব পাল, পার্থ প্রতিম মণ্ডলদের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে কমিশন যে ভাবে যোগ্যদের বঞ্চিত করে সুকৌশলে অকৃতকার্যদের নিয়োগ করেছে তা নজির বিহীন। তবে এই ঘটনায় ন্যায়বিচারের ভার আবারও মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই তুলে দিয়েছেন তারা। তারা আশাবাদী মমতা বন্দ্যোপাধায় প্রতিশ্রুতি রাখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।

একদিকে অতিমারির খাঁড়া, অন্যদিকে বর্ষার স্যাঁতস্যাতে পরিবেশের মধ্যে দীর্ঘ ১৪৪ দিন ধরে এই অনশন চলছে। তারা আশাবাদী রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী যোগ্য মেধার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.