রাজ্য জুড়ে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা সংক্রমণ। নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াতে উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। সোমবার নবান্ন থেকে এক নির্দেশিকা জারি করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট হয়ে যাওয়া দশটি জেলার প্রশাসনের সঙ্গে এদিন বৈঠক করেন মুখ্যসচিব।
নবান্ন সূত্রে খবর বেশ কয়েকটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এগুলি হল
১) ২০২০ সালে কোভিড সংক্রমণের সর্বোচ্চ অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো তার থেকেও ২০ শতাংশ অধিক ব্যবস্থা তৈরি রাখার নির্দেশ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ব্যবস্থা তৈরির নির্দেশ।
২) মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন করা যেতে পারে। আরটিপিসিআর টেষ্ট বাড়াতে হবে।
৩) জনবহুল এলাকায় অবাঞ্ছিত ভিড় এড়ানোর নির্দেশ।
৪) অক্সিজেন যাতে অপ্রতুল না হয় এখন থেকেই সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা।অ্যাম্বুলেন্স ও ভেন্টিলেশন এর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর প্রচার করতে হবে। ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না।যে যে জেলায় ভোট মিটে গিয়েছে সেই সব জেলায় করোনা সচেতনতায় আরো জোর দিতে হবে।
৬) এখন থেকেই সেফ হোম এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। আর সেফ হোমগুলোর জন্য চিকিৎসক নির্দিষ্ট করে রাখতে হবে।
এদিকে, নির্বাচনের মধ্যেই লাফিয়ে বাড়ছে দৈনিক করোনা সংক্রমণ। ক্রমেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক আকার নিচ্ছে। রবিবারও রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ৪ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। মোট আক্রান্তের মধ্যে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণা এই দুই জেলা মিলে আক্রান্তের সংখ্যাটা ২ হাজারের বেশি। সেখানে রাজ্যে এদিন মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৯৮ জন। অর্থাৎ কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণা এই দুই জেলাতেই আজকের নিরিখে অর্ধেক সংক্রামিত।
অন্যদিকে গোটা রাজ্যে এদিন করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। যা অবশ্য আগের দিনের তুলনায় সংখ্যার বিচারে ২ কম। তবে তাতে তেমন স্বস্তি পাচ্ছেন না মানুষ। চিন্তা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে। হু হু করে বাড়ছে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা। শনিবার অর্থাৎ গতদিন থেকেই রাজ্যে প্রতিদিনের সংক্রমণটা ৪ হাজারের গণ্ডি পার করছে এবং তা লাফিয়ে বাড়ছে। শুক্রবারে সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ৬৪৮ জন। বৃহস্পতিবার বা তার আগে সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজারের নীচেই। অর্থাৎ গত দুদিন ধরেই এরাজ্যেও ঊর্ধমুখী হয়ে উঠেছে সংক্রমণ।
এমনকি পরিস্থিতি এমন হয়ে উঠেছে শহরের সরকারি হোক বা বেসরকারি, বিভিন্ন জায়গায় বেড সংকুলান দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে বেডের অপ্রতুলতার সংকটে ভুগছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। বেড সংকটে ভুগছে কলকাতার সরকারি একাধিক হাসপাতাল।