পদ্মাসনে সৌরভ : ৭ বছরে এই প্রথম ‘অফিসিয়াল ইঙ্গিত’ বিজেপির

বিজেপির অফিসিয়াল বক্তব্য?

এমন কথা এখনই বলা যাবে না।

তবে অফিসিয়াল ইঙ্গিত বললে কোনও পক্ষই সম্ভবত কিছু মনে করবেন না!

বিস্তারিত বলার আগে ছোট করে বলে রাখা ভাল যে, এই রচনা টি সৌরভের বিজেপি যোগ সংক্রান্ত।

আজ, বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন দাদা। বেহালায় বেজে উঠেছে আনন্দসুর। দেশ ও দুনিয়া জুড়ে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন সৌরভের গুণগ্রাহীরা। এমনই এক অনির্বচনীয় আবহে রাজ্য বিজেপির অফিসিয়াল সাংবাদিক বৈঠকে… না, বোমা ফাটাননি, বরং বলা ভাল অদূর ভবিষ্যতে বোমা ফাটাবার নিমিত্ত খুস করে দেশলাই কাঠি টি জ্বালালেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র, সুবক্তা ও সুরসিক শমীক ভট্টাচার্য।

সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল লক্ষীরতন শুক্লা সংক্রান্ত। লক্ষী বিজেপিতে আসবেন কি না? এলে কবে আসতে পারেন? স্বামীজির জন্মদিনে নাকি তার আগে অথবা প্রজাতন্ত্র দিবসে? এইসব প্রশ্ন এখন রাজনীতির ‘ঠেক’ গুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সাংবাদিকদের মনেও হয়ত এমনই কোনও প্রশ্ন ছিল। শমীক লক্ষী কে নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে সৌরভকেও জড়িয়ে নিলেন। শুধু জড়িয়ে নিলেন বললে কম বলা হয়, বলা ভাল কোনও স্পেসিফিক প্রশ্ন ছাড়াই তিনি উত্থাপন করলেন সৌরভের নাম।

এমনিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া লক্ষীর রাজনীতি ছেড়ে খেলা শুরু করার কথা আর বিশেষ কেউ বিশ্বাস করেছে বলে মমতার অতি বড় ভক্তও মনে করেন না!

লক্ষী ৩৯ বছর বয়েসে আবার ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন কিংবা হাইকোর্ট প্রান্ত থেকে আবার ছুটতে শুরু করবেন বল হাতে, এ কথা বালক-বালিকা তো দুর ডিজিটাল যুগের একটি সদ্যোজাত শিশুও বিশ্বাস করবে না!

বাকি রইল মাঠের বাইরের খেলা, ক্রিকেট প্রশাসনের খেলা। তার জন্য কেউ মন্ত্রীত্ব ছেড়েছে এ কথা আগে কখনও কেউ শোনেনি। বরং মন্ত্রীর কুর্সি এসব খেলায় বিশেষ ভ্যালুঅ্যাড করে। ফলতঃ মুখ্যমন্ত্রী লক্ষীর মন্ত্রীত্ব ছাড়ার বিষয়টি হালকা ভাবে দেখাতে চাইলেও বিষয়টা যে অত সরল নয় তা বেশ বুঝেছে পাবলিক।

এসবের মধ্যে সাংবাদিক বৈঠকে সৌরভের নাম এনে পুরো বিষয়টিকে এ দিন অন্য মাত্রা দিল রাজ্য বিজেপি।

শমীক ভট্টাচার্য এদিন বলেন, “আমি তো শুনছি বিশ্রাম পর্ব শেষ হলে সৌরভ আর লক্ষী দুজনে নেট প্র্যাকটিস করবেন!” ২০১৪ সাল থেকে অর্থাৎ দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ যাঁরা দাদার পদ্মপ্রবেশের সম্ভাবনার বিষয়টি নজরে রেখেছে, তাঁদের কাছে আপাত রসিকতাপূর্ণ শমীকের এই ভাষ্যটি মোটেই হালকা চালে বলা কোনও আলটপকা মন্তব্য নয়। বরং রীতিমত রাজনৈতিক স্টেটমেন্ট, সরাসরি না বলে রসিকতার মোড়কে মোড়া।

শমীকের এ দিনের কথা টি যদি বিজেপির অফিসিয়াল বক্তব্য না ও হয়, এটি যে অফিসিয়াল ইঙ্গিত সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়।

সৌরভের বিজেপি যোগের খবর বাতাসে এসেছে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে। তখন প্রকাশ জাভরেকর থেকে শুরু করে বরুন গাঁধীর মত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এই বিষয়ে হ্যাঁ বা না যে কোনও মন্তব্য করা থেকেই বিরত ছিলেন। প্রশ্মের উত্তরে সরাসরি ‘হ্যাঁ’ যেমন বলেন নি, তেমনই খেয়াল রাখতে হবে ‘না’ বলেও বিষয়ের নিষ্পত্তি করেন নি।

বিগত ৭ বছর ধরে একটি সম্ভাবনা জীবিত আছে। এতদিনে মলাট লাগিয়ে হলেও বিজেপির কোনও সাংবাদিক বৈঠকে, কোনও মুখপাত্রের মুখে শোনা গেল সৌরভের নাম।

২০১৪ থেকে ঝুলে থাকা সম্ভাবনার ফল একুশে এসে যদি ভোট পুজার ডালিতে পড়ে তবে রাজনীতির রণাঙ্গন যে আরও রসময় হবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.