পঁচিশ দিনে পড়েছে অনশন। শঙ্খ ঘোষ থেকে বিভাস চট্টাপাধ্যায়, মন্দাক্রান্তা সেন, বাদশা মৈত্রের মতো ব্যক্তিত্বরা বিভিন্ন সময়ে সমর্থন জানাতে ছুটে এসেছেন চাকরির দাবিতে এসএসসি অনশনকারীদের কাছে। এবার সেই তালিকায় যোগ দিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শঙ্খবাবুর মতোই চিঠি লিখে তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের অনশনরত চাকরি প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন।
রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের কাছে নিজে হাতে একটি চিঠি লিখে পাঠান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি চুলে ধরেন, যে কষ্ট সহ্য করে চাকরির দাবিতে এসএসসির অনশনকারীরা আন্দোলন করছেন, তা কুর্নিশযোগ্য। তিনি লিখেছেন, “এই অবস্থাতেও রাজ্য সরকার এই অনশনকারীদের দাবিদাওয়া মেটানোর ক্ষেত্রে কোনও সদর্থক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটা সহ্য করা যাচ্ছে না। সরকারের কাছে অনুরোধ, তারা যেন এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসির শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনে বসেছিলেন প্রায় সাড়ে চারশো পরীক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর আপডেটেড প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সব পরীক্ষার্থীদের মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ওয়েটিং লিস্টে থাকা সব পরীক্ষার্থীদের চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে।
অনশন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেকেই। বাড়ি ফিরে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন। এমনকী অন্তঃসত্ত্বা আন্দোলনকারী হারিয়েছেন তাঁর গর্ভের সন্তানকে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন জন। রক্ত আমাশা হচ্ছে এক অনশনকারীর। কিন্তু অনশনকারীদের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, যতদিন না তাঁদের দাবিদাওয়া মিটছে, ততদিন আন্দোলন চলবে।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়েকদিন আগেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিতে বলেছিলেন। কিন্তু কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেননি। যতদিন না সেই লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাবে, ততদিন অনশন চলবে বলেই জানানো হয়েছে তাঁদের তরফে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সদস্য ডক্টর অনির্বাণ দত্ত শুক্রবার অনশন মঞ্চে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, আন্দোলনকারী মহিলাদের শৌচালয় সংক্রান্ত সমস্যা তীব্র। ইতিমধ্যেই অনেকের শরীর বাসা বেঁধেছে ক্ষতিকর ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন। কারও কারও বুকেও বাসা বেঁধেছে ইনফেকশন। অনেকের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। মহিলা-অনশনকারীদের অনেকেই রক্তাল্পতায় ভুগছেন। কোনও কোনও অনশনকারীর রক্তচাপ ভীষণ কম।