পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিজেপির মঞ্চে গিয়ে সেই নিজেদের পরিবারতন্ত্রকেই স্পষ্ট করলেন শিশির অধিকারী। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
পরিবারতন্ত্র প্রকট হয়েছে তৃণমূলে। তাই তাঁরা দলত্যাগ করেছেন। এমনটাই অভিযোগ উঠে আসে শান্তিকুঞ্জের বাড়ি থেকে। এ বাড়ি বাংলার রাজনীতির এক বিশাল অঙ্গ। কারণ সেই বাড়ির প্রধান শিশির অধিকারী। তারপর তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম। যাদের সবাই তৃণমূলের বড় বড় পদে ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে এসে হঠাৎ সবাই একযোগে দল ছাড়লেন। পরিবারের প্রধান মুখ শুভেন্দু অধিকারী। তিনি প্রথমে ফুল পরিবর্তন করে অভিযোগ তুলেছিলেন দলে পরিবারতন্ত্রের। শিশির অধিকারী তাঁর বাবা যখন শেষ পর্যন্ত সেই পদ্ম শিবিরেই গিয়েই গা এলালেন তখন বারবার অভিযোগ তোলেন সেই পরিবারতন্ত্রের দিকেই। অথচ বিজেপির মূল মঞ্চে উঠে শিশির অধিকারী যা বললেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তাঁর করা এতদিনের অভিযোগের দিকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ঠিক কি বললেন শিশির অধিকারী? অমিত শাহকে বললেন, ‘আপনার কাছে প্রার্থনা আমাদের জেলাকে আপনি রক্ষা করবেন। আমার পরিবার আপনার সঙ্গে আছে’। ঠিক এই পরিবার কথাটিকেই উদ্দেশ্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, ‘যদি অন্য এক পরিবারই তৃণমূলে থাকার মূল সমস্যার হবে তাহলে বিজেপির মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের পরিবারের কথা বরাই করে কীভাবে বললেন শিশির অধিকারী?’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘প্রশ্ন উঠবে যে সেই তো নিজের পরিবারতন্ত্রকেই বড় করে দেখিয়ে দিলেন জনসমক্ষে। বলতে পারতেন যে মেদিনীপুরের মানুষ আপনাকে সাহায্য করবে। তা না বলে অধিকারী পরিবারের দহরম মহরম বোঝাতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন শিশির অধিকারী’।
অনেকটা একই কাণ্ড করেছিলেন ছেলে শুভেন্দুও। নিজেই পদ্ম শিবিরে যোগদানের সময় বলে ফেলেছিলেন ২০১৪ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। শুধু এইটুকুই নয় অসুস্থ বলে নিজেকে বারবার প্রতিপন্ন করেছেন শিশির অধিকারী। সেই শিশিরবাবুই বিজেপিতে যাওয়ার সময় চাঙ্গা। সাদা ধুতি পাঞ্জাবি জড়িয়ে তাঁর ঠাটবাট দেখলে পুরনো মেজাজের শিশির অধিকারীকেই মনে পড়ে। সেই তিনি বেশ কিছু মাস ধরে বলে এসেছেন তিনি অসুস্থ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দলের কোনও সভায় আর দেখা যায় না শিশির বাবুদের। অভিযোগ করেছিলেন এভাবেই ইচ্ছাকৃত দলকে বিপদে ফেলেছে অধিকারী পরিবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন , ‘আজ হঠাৎ করে চাঙ্গা হয়ে ওঠা শিশির অধিকারী যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা অভিযোগে শিলমোহর দিলেন।’