বিজেপি-তে যোগদানের পর এটাই ছিল নন্দীগ্রামে তাঁর প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি৷ ফলে শুভেন্দু অধিকারী কী বলেন, সেদিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের৷ কিন্তু কার্যত সবাইকে অবাক করে দিয়ে সভা থেকে প্রায় কিছুই বললেন না শুভেন্দু৷ শুধু তিনি জানালেন, ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল তৃণমূলের। সেই সভা হয়নি। আগামী ১৮ তারিখ তারা সভা করবে বলে জানিয়েছে। আগামী ১৯ তারিখ খেজুরিতে আমাদের পালটা সভা হবে। ১৮ তারিখের উত্তর ওই দিন দেব।
এদিন, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার সভা চলাকালীন সভামঞ্চের ডান দিকে উপস্থিত কর্মীদের লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ বিজেপির। এতে কর্মীদের মধ্যে সাময়িক আতঙ্ক তৈরি হয়। মঞ্চে উপস্থিত বিজেপি নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সভা শেষে শুভেন্দু বলেন, সবাই বাড়ি না পৌঁছনো পর্যন্ত আমি সভাস্থলে থাকছি। তিনি বলেন, আমি চাইব সূর্য ডোবার আগে আপনারা সবাই বাড়ি চলে যান। আজ সভায় ইট মেরে সভা ভন্ডুল করার চেষ্টা হয়েছিল। আমি সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি, কিন্তু সিপিএমও তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সভায় কোনওদিন ঢিল ছোড়েনি। ৪১টি শহিদ পরিবারের মধ্যে ৩০টি পরিবার আজ এখানে উপস্থিত রয়েছে। এদিনের সভায় উত্তেজনা ছড়ালে মঞ্চের দখল নেন বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘আমার ওপর ভরসা আছে তো?’
নন্দীগ্রামে বিজেপির সভায় এদিন যোগ দেন একাধিক ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্য।গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই নন্দীগ্রামের ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা আছেন দাদার সঙ্গেই। এদিন সভায় হাজির হয়ে তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন দল নয়, তাঁরা দাদার অনুগামী।
শহিদ পরিবারের সদস্যরা জানান, নন্দীগ্রাম কাণ্ডের পর থেকে গত ১৪ বছর ধরে নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পরিবারগুলির পাশে থেকেছেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। ফলে দাদার হাত ছাড়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পর তিনি নন্দীগ্রামের নিহত মানুষদের পরিবারের সঙ্গে বেইমানি করেছেন বলে প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল। এদিন ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যদের হাজির করে শুভেন্দু বুঝিয়ে দিলেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের স্বীকৃতির পালক থাকবে তাঁর মুকুটেই।