সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের নতুন মুখ হিসেবে বেছে নেওয়া হল বাংলার খেলোয়াড় স্বপ্না বর্মনকে। তাঁদের নতুন কালেকশন ‘এভারলাইট’-এর আত্মপ্রকাশে কর্তৃপক্ষ জানান, নারীশক্তির উদঘাটনের পাশে থাকতেই এই পদক্ষেপ তাঁদের। কারও শক্তিকে অবজ্ঞা না করার বার্তা দিতে তাই এই কালেকশনের ট্যাগলাইন, “ডোন্ট টেক মি লাইটলি”।
পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় গয়নার রিটেল শপ সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এই নতুন এভারলাইট কালেকশনের ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর হওয়ার পরে স্বপ্না বলেন, শারীরিক বা সামাজিক– যে কোনও প্রতিবন্ধকতা জয় করেই নিজের লড়াইয়ে সেরা হওয়া যায়। বাধাগুলো কখনও কখনও অতিরিক্ত শক্তি হয়ে ওঠে মানুষের। আমিও ব্যতিক্রম নই। তবে নিজের স্পোর্টসে জিতলেও, আজ অন্য ভূমিকায় মানুষের মন জয় করতে ভাল লাগছে।
সেনকো-র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, এই নতুন এভারলাইট কালেকশন আনা হয়েছে ডায়নামিক মেয়েদের কথা ভেবে। ইদানীং বহু মেয়ে ঘরে-বাইরে সমান তালে কাজ করে। তাঁদের জন্য এমন কোনও গয়নার কথা আমরা ভেবেছি, যা রোজকার জীবনে ঘরে পরে থাকা যাবে, আবার অফিসেও যাওয়া যাবে। পার্টিওয়্যারের সঙ্গেও মানিয়ে যাবে এগুলি। নানান আধুনিক ডিজ়াইনের কানের দুল, গলার চেন, পেনডেন্ট এনেছি আমরা। দাম শুরু মাত্র ৬,৯৯৯ টাকা থেকে। সোনার গয়নার পাশাপাশি হীরের গয়নাও মিলবে এই কালেকশনের অন্দরে।
তাঁর দাবি, এই কালেকশনের গয়নাগুলি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস জোগাবে মেয়েদের। জীবনের বাধা পার করে সফল হয়ে ওঠার সঙ্গী হবে অলঙ্কার। আর এই সব ভেবেই স্বপ্নাকে সামনে এনেছেন তাঁরা।
গত বছরে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে হেপ্টাথলনের মতো কঠিন ইভেন্টে দেশকে প্রথম সোনা এনে দিয়েছিলেন স্বপ্না।জলপাইগুড়ির এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে স্বপ্নার এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস। স্বপ্নার বাবা পঞ্চানন বর্মন পেশায় ভ্যান চালক। অসুস্থতার জন্য গত সাত বছর ধরে তিনি শয্যাশায়ী। মা বাসনা বাড়ি বাড়ি কাজ করে ও চা বাগানে পাতা তুলে সামান্য টাকা রোজগার করেন। স্বপ্না নিজেও শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন। তাঁর পায়ের দু’ পাতায় ছ’টি করে আঙুল, ফলে ইভেন্টে পারফর্ম করার সময় প্রায়ই অসহ্য যন্ত্রণার শিকার হন তিনি। তার পরেও জয় দূরে থাকেনি তাঁর থেকে।
এ বছরে অর্জুন পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন স্বপ্না। ফলে নারীশক্তির প্রতীক হিসেবে স্বপ্না বর্মনকে সামনে নিয়ে আসার ঘটনা নিঃসন্দেহে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের পক্ষে বেশ কৃতিত্বের। তাঁদের আশা, তাঁদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবেন ক্রেতারাও।