উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষদের নিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী মন্তব্যের জেরে শাহিনবাগ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সারজিল ইমামের বিরুদ্ধে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ। এই একই অভিযোগে অসম সরকার আগেই মামলা করেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের তরফে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। উস্কানিমূলক মন্তব্য করার জন্য এই এফআইআর করা হয়েছে সারজিলের বিরুদ্ধে। কয়েক দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় সারজিলের একটা ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এই ভিডিওতে দেখা যায় সাম্প্রদায়িক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মন্তব্য করেছেন জেএনইউয়ের এই ছাত্র। ভিডিওতে সারজিলকে বলতে শোনা যায়, “অসমে মুসলিম ও বাঙালিদের মারা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সব বাংলাভাষীকে মারা হবে। ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে। তাই অসমকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে অন্তত কয়েক দিনের জন্য এই রাজ্যকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।”
এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই সারজিল ইমামের বিরুদ্ধে মামলা করে অসম সরকার। তারপরে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সোচ্চার হয়েছেন সারজিল। হিন্দি ও ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে লিখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছড়িয়ে বিক্ষোভের প্রচার করেছেন। শাহিনবাগে যে ধর্না হচ্ছে তারও অন্যতম প্রধান মুখ বলা হয় এই সারজিল ইমামকে। তবে সারজিলের ওই বিতর্কিত ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের তরফে একটা বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, “নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শাহিনবাগে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন ৪৩ দিনে পড়ল। দিনে দিনে আন্দোলনের পরিসর বেড়েছে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তাই এই আন্দোলনকে কোনও একজন সারজিল ইমাম বা কারও একার আন্দোলন বলা যাবে না। এটা জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলনের কোনও নেতা বা মুখ নেই।”
অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও অনেকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন জেএনইউয়ের এই ছাত্র। অযোধ্য মামলার রায় ঘোষণার পর তিনি বলেছিলেন, সংবিধান পুড়িয়ে ফেলবেন। তখনও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই ঘরছাড়া সারজিল। তবে এবারে সারজিলের বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ ওঠায় অনেকেই মনে করছেন, এবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া থেকে বেশিদিন পালিয়ে বেড়াতে পারবেন না তিনি।