১৯৪৭ এর পর তিন চার বার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে এমন কি ‘গণপ্রজাতন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ’ বাংলাদেশ মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে গঠন করেও ইন্দিরা গান্ধী প্রতিবেশি রাষ্ট্র থেকে সেই দেশের দাবিদারদের ঢুকে পড়া বন্ধ করতে পারলেন না

কলকাতার নিমু গোস্বামী লেন, প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রীটে কিছু বাড়ির দেওয়ালে ‘গৃহস্থ বাড়ি’ কথাটা লেখা থাকে। উদ্দেশ্য বিকেলে যখন পন্যাঙ্গনারা চার দিকে গিজ গিজ করে তখন যেন তাদের বাবুরা ওই সব বাড়িতে ঢুকে না পড়ে। ১৯৪৭ এর পর তিন চার বার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে এমন কি ‘গণপ্রজাতন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ’ বাংলাদেশ মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে গঠন করেও ইন্দিরা গান্ধী প্রতিবেশি রাষ্ট্র থেকে সেই দেশের দাবিদারদের ঢুকে পড়া যখন বন্ধ করতে পারলেন না। তখনই তিনি ভারতের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটা ওই ‘গৃহস্থবাড়ির’ মত সেঁটে দিলেন।তার পরে এরশাদ জামানার পর ঝাঁকের কৈ ঝাঁকে মিশে বাংলাদেশ নিজের ধর্মনিরপেক্ষ তকমাটা খুলে ফেলল। ভারতের বর্তমান শাসকদল এই কাঁঠালের আমসত্ত্বর মত ‘গৃহস্থবাড়ি’ সাইনবোর্ড খুলে শক্ত পাঁচিল তোলার প্ল্যান sanctioned করিয়েছে। ফলে বিনা ভাড়ার বাসিন্দা ও নানা ধান্ধার টাউটরা বিচলিত। পৃথিবীতে কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন,অস্ট্রেলিয়া বা চীন,জাপান, জার্মানী কোন দেশ নিজেকে সেকুলার তকমা দেয়নি।

এমন কি ‘প্রচন্ড’ গতিতে নেপাল নিজের হিন্দু রাষ্ট্র পরিচিতি ত্যাগ করলেও ভারতের মত গায়ে ধর্মনিরপেক্ষ ট্যাটু এঁকেছে কিনা জানি না। হিন্দুস্তান ইহুদী, পারসী,মোগল এমন কি ইসলামকে গ্রহণকারী অসংখ্য ভারতরত্নকে তার absorbting and assimilating pull এর শক্তিতে স্বভাবগতভাবেই সর্বগ্রাহী, সর্বগ্রাসী নয়। But sky can not be the limit. এই কথাটা কল্যাণী শহরের ভূতপূর্ব চেয়ারম্যান শান্তনু ঝা আমাকে বলেছিলেন যখন বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বসতি বানাল।

সেটা নব্বই দশকের শেষ।তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছিলাম, আশির দশকে স্টেটসম্যানে তখনকার রাজ্যপাল সি রাজেশ্বর তিন কিস্তিতে এই অনুপ্রবেশ নিয়ে লিখলে শান্তনুবাবুর দলই তো প্রবল প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। তখনই তিনি sky can not be the limit বলেছিলেন।

আজ ডিকেন্সের ভাষায় এই বংলার best and worst of timeএ বাংলায় গান গাওয়া গায়ক কবি বা টেবিল মোছার স্তাবক কবি কুৎসিত অঙ্গভঙ্গী সহ কাকেশ্বর কুচকুচে হচ্ছে।উকিল সাংসদ বেপরোয়া ফক্সট্রটে রাজেশ খান্না সাজছেন কিংবা ‘অধ্যাপক’ সাংসদ ধূতি সামলে তু চিজ বড়ি হ্যায় তে পা মেলাচ্ছেন তখন একটাই কথা বলতে ইচ্ছে করে:

ওরা ই আছে বেশ
যদিও এ যাত্রাই শেষ।

ডঃ কুনাল চট্টোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.