স্কুলের ব্ল্যাক বোর্ডে মেনুর তালিকায় বড়ো বড়ো করে লেখা রয়েছে- ফ্যানা ভাত, নুন। ব্ল্যাক বোর্ডের নিচে সার বেঁধে পাত পেড়ে মিড ডে মিলে নুন-ভাত খাচ্ছে স্কুলের ছাত্রীরা। এই চিত্র হুগলির চুঁচুড়ার একটি বালিকা বিদ্যালয়ের। তবে একদিন নয়, এই ঘটনা নাকি নিত্যদিনের!
সাপ্তাহিক মেনুতে যে সমস্ত খাবারের কথা উল্লেখ করা রয়েছে তার বদলে ছাত্রীদের কপালে দীর্ঘ দিন ধরেই জুটছে নুন-ভাত। ঘটনার কথা জানতে পেরে, তড়িঘড়ি সোমবার স্কুলের পরিস্থিতি চাক্ষুষ দেখতে ছুটলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
ফের মিড ডে মিলে দুর্নীতির অভিযোগ। সপ্তাহে ৫ দিন স্কুলের মিড ডে মিলের মেনুতে থাকে নির্দিষ্ট কিছু পদ। আজও ছিল। সোম বারের নির্দিষ্ট পদের তালিকায় ছিল- ভাত, ডাল এবং সয়াবিনের তরকারি। কিন্তু ছাত্রী দের পাতে জুটেছে শুধু নুন ভাত। কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? জানতে চাইলে স্কুলের শিক্ষকারা জানান, স্কুলে দীর্ঘ দিন ধরেই নাকি স্কুলে টিচার ইন চার্জ নেই। তাই স্কুলের পরিচালন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। তাঁরা আরও জানান, তাঁদের কাছে যেমন খাদ্যের জোগান আসে তেমন টাই স্কুলের বাচ্চাদের সামনে তুলে দেন তাঁরা।
স্কুলের ছাত্রীরাও জানিয়েছে, শুধু আজ নয়, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের এই ধরণের খাবার খেতে হচ্ছে। যা মোটেই দস্তুর নয়।
ঘটনার কথা জানতে পেরেই তড়িঘড়ি সোমবার স্কুলের পরিস্থিতি চাক্ষুষ দেখতে ছুটে যান হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এটা নিতান্ত অভাবনীয় ঘটনা। স্কুলের বাচ্চাদের খাবার চুরি করা হচ্ছে। স্কুলের পরিচালন সমতির মধ্যেও তৃণমূলের দাদাগিরির নজির। এখানেও তাঁদের থাকতে হবে? যার উদাহরণ আজ বাচ্চাদের মিড ডে মিলে নুন-ভাত।
লকেট আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তাঁর কন্যাশ্রী বিশ্ব বন্দিত হচ্ছে। এদিকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর কন্যারাই বঞ্চিত হচ্ছেন। লকেট অভিযোগ তোলেন, ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫ হাজারটি ডিম কেনা হয়েছিল। কিন্তু তা ছাত্রীদের পাত পর্যন্ত পৌঁছয়নি। সেটা কি তৃণমূল নেতাদের বাড়ি গিয়ে ঢুকেছে?
এদিকে, ঘটনা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ঘটনার পিছনে যারাই থাকুক না কেন তাদের শাস্তি হবে। তিনি তদন্ত করে দেখবেন। এছাড়া লকেটের বক্তব্যের পাল্টা জবাবে তিনি জানান, সাংসদ তো স্কুলে ছুটে গিয়েছিলেন। ওনার উচিৎ উক্ত প্রকল্পে রাজ্যের জন্য যে টাকা আসেনি তা দ্রুত রাজ্যকে দিতে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে।