রাজ্য নির্বাচন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের পদ থেকে কি সরিয়ে দেওয়া হবে সঞ্জয় বসুকে? জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেই প্রস্তাব এখন গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

রাজ্য নির্বাচন দফতরের বিরুদ্ধে বাংলায় বিরোধী দলগুলি কমবেশি শুরু থেকেই সরব। সব থেকে প্রতিবাদী পোড় খাওয়া বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমানায় দু’টি নির্বাচনের সময়ে দলীয় তরফে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১১ ও ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট। এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। এবং নির্বাচন কমিশনের বিষয়-আশয় তিনিই দেখতেন। ফলে রাজ্য নির্বাচন দফতরের ভিতরের রসায়ন তাঁর গুলে খাওয়া বলেই মুকুলবাবুর ঘনিষ্ঠদের দাবি।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, সম্প্রতি মুকুল রায়ের নেতৃত্বে বিজেপি নেতারা যে দিন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের দফতরের ধর্নায় বসেছিলেন, সে দিনও বারবার করে উঠে এসেছিল সঞ্জয় বসুর প্রসঙ্গ। পরে সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য মুকুলবাবু বা জয়প্রকাশ মজুমদারেরা সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি। কিন্তু কমিশনের ভিতরে তাঁদের ধর্নার সময়কার যে ভিডিও ফুটেজ ফাঁস হয়েছিল, তাতেও দেখা যায় সঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁরা। এমনও বলছেন, সাংবাদিক বৈঠক করতে ওঁকে পাঠানো যাবে না।

বিজেপি নেতৃত্বের এ-ও অভিযোগ, বাংলায় রাজ্য নির্বাচন দফতরের অনেকেই নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন না। রাজ্য নির্বাচন দফতরে গিয়ে বিরোধীরা যা বলছেন, সেই খবর মুহূর্তের মধ্যে চলে যাচ্ছে নবান্নে বা কালীঘাটে।

মুকুলবাবুদের বক্তব্য, এর ফলে কমিশনের উপরেই অনাস্থা তৈরি হচ্ছে কারও কারও। সুতরাং সেই নিরপেক্ষতার দায় রক্ষার দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন কমিশনেরও।

সূত্রের মতে, বিরোধীদের সেই অভিযোগই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে দিল্লির নির্বাচন সদন। সঞ্জয় বসুকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে এ ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন দফতরের আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করেননি। কারণ, তাঁরা গোড়া থেকেই বলছেন, রাজনৈতিক ভাবে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার জবাব তাঁরা দেবেন না।

লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় এ বার সাত দফায় ভোট গ্রহণ হবে। তার মধ্যে প্রথম দফায় ভোট গ্রহণ হয়ে গিয়েছে ১১ এপ্রিল। পরের দফায় ভোট হবে কাল বাদে পরশু, অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল। তার আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের থেকে এ হেন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা তাৎপর্যপূর্ণ বইকি। মনে রাখতে হবে, প্রথম দফার নির্বাচনের ৪৮ ঘন্টা আগে কোচবিহারের পুলিশ সুপার বদল করে দিয়েছিল কমিশন। এখন দেখার দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণের আগে তেমন কোনও পদক্ষেপ করে কি না নির্বাচন সদন।

তবে সঞ্জয় বসু নিজে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “এটা আমার বলার বিষয় নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.