অনেক দড়ি টানাটানির পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সব্যসাচী দত্ত। কিন্তু এই ইস্তফাপত্রের মধ্যে দিয়েই নতুন যুদ্ধ শুরু করে দিলেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। সরকারের উপরতলাকে টার্গেট করে তাঁর ইস্তফাপত্রে লিখলেন, “আমারে দাবায়ে রাখতে পারবা না।”
দু’পাতার ইস্তফাপত্রের শেষের আগের প্যারাগ্রাফে সব্যসাচী লিখেছেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ নতুন করে বাংলায় জনপ্রিয় হয়েছে। আমিও ওই মুক্তযুদ্ধের একটি জনপ্রিয় স্লোগান বলে এই ইস্তফাপত্র শেষ করছি। তা হল, “আমারে দাবায়ে রাখতে পারবা না।”
ইস্তফাপত্রে সব্যসাচী লিখেছেন, “রাজারহাট-গোপালপুরে বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। জলাভূমি ভরাট হয়েছে। আমি একের পর এক চিঠি লিখেছি সরকারের একেবারে উপরতলাকে। কিন্তু কোনও কর্ণপাতই করা হয়নি।”
নিজের ইস্তফা দেওয়াকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ এবং জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথের নাইট উপাধি ত্যাগের তুলনা টেনেছেন সব্যসাচী। ইস্তফাপত্রে লিখেছেন, “তাঁদের সঙ্গে তুলনা করার কোনও প্রশ্নই নেই। মেয়র পদটিও একটি নগন্য পদ। কিন্তু তাঁরা যেমন ন্যায়ের জন্য প্রতিবাদ করেছিলেন। আমিও তাঁদের দেখানো পথেই হেঁটেছি।”
তাঁর আরও বক্তব্য, “গলিয়াথের বিরুদ্ধে ডেভিড যেমন অসম লড়াই লড়েছিল, আমিও সেই লড়াই শুরু করেছি আদালতে কড়া নেড়ে।” ইস্তফাপত্রে সব্যসাচী তাঁর সহকর্মী কাউন্সিলরদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই যে অমানুসিক চাপ গিয়েছে তাঁদের উপর, জোর করে অনাস্থায় সই করানো হয়েছে তাঁদের, এ জন্য তিনি দুঃখিত।
ক্ষমতার অলিন্দে কিছু মানুষের লিপ্সার কথা ইস্তফাপত্রে তুলে ধরেছেন সব্যসাচী। সেই সঙ্গে বলেছেন, যতদিন তিনি বাঁচবেন, কথা বলার শক্তি থাকবে, ততদিন লড়াই চালিয়ে যাবেন।