সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। আর নির্বাচনের আগে রাজ্য পুলিশে ব্যাপক রদবদল। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে মোট ৭০ জন ইন্সপেক্টরকে বদলি করা হল। আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই রদবদল হয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। দফায় দফায় পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিনবঙ্গের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক হয় কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও।
জানা যায়, ওই বৈঠকে তিনি সন্তুষ্ট হননি বলেই জানা গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার রিপোর্ট দেখে সেটিকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কার্যত ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের এহেন মন্তব্যের ২৪ ঘন্টার মধ্যে বদলি করা হল ৭০ জন পুলিশ আধিকারিককে। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার রাতে মোট ৭০ জন পুলিশ ইন্সপেক্টরকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে অনেকেই তিনবছরেরও বেশি সময় ধরে একই রাজ্যে নিযুক্ত ছিলেন। তবে নির্বাচনের আগে রাজ্য পুলিশের এই খোলনচে বদলে ফেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে, একইসঙ্গে বিভিন্ন জেলার ওসি পদে পরিচালিত থানা গুলিকেও আইসি থানায় উন্নীত করা হয়েছে। রদবদল ও ওসি থেকে আইসি থানায় উন্নীতর তালিকায় মোট সত্তর জন ইন্সপেক্টরের নাম রয়েছে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশিকা রাজ্য পুলিশের তরফে জারী করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এদিনের নির্দেশিকায় যে সমস্ত ইন্সপেক্টরের নাম রয়েছে তাঁদের মধ্যে কুচবিহারের কোতোওয়ালির আইসি সৌম্যজিৎ রায়কে শিলিগুড়ি থানায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিআইবি ইন্সপেক্টর সঞ্জীব বিশ্বাস ব্যারাকপুরের এসভিএসপিএ’র ইন্সপেক্টর জয়ন্ত দত্ত ও কালিম্পঙ’র ডিআইবি ইন্সপেক্টর গৌতম রায়কে যথাক্রমে মানিকচক হেমতাবাদ এবং মেটেলি থানার আইসি করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় যে সমস্ত থানাগুলিকে আইসি থানায় উন্নীত করা হয়েছে তার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন হিলি ও কুমারগঞ্জ থানার নামও রয়েছে। জলপাইগুড়ির কোর্ট ইনস্পেক্টর দীপজ্জল ভৌমিক বারাসাত পুলিশ জেলার ডিআইবি ইন্সপেক্টর সুজয় বন্দোপাধ্যায় ও দার্জিলিংয়ের ডিআইবি ইন্সপেক্টর গণেশ শর্মাকে যথাক্রমে তপন কুমারগঞ্জ এবং হিলি থানার আইসি করা হয়েছে।
অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ বাংলায় ভোট করানোটা চ্যালেঞ্জ কমিশনের। গত পঞ্চায়েত কিংবা লোকসভায় যেভাবে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোটের দাবি উঠেছে। রাজ্য পুলিশ নয়, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তায় ভোট করানোর দাবি উঠেছে। আর সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার মধ্যে অন্যতম পুলিশ-প্রশাসনের রদবদল।