কারাগারে সঙ্গী ছিল মহাভারত। পড়তেন রবীন্দ্রনাথের একের পর এক কবিতা। চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের নায়ক ফাঁসির আগে চিঠিতে লিখছেন, ভবিষ্যতের ভারতের কাছে তিনি রেখে যাচ্ছেন স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। গত শুক্রবার ছিল সূর্য সেনের জন্মদিন।
মাস্টারদা সূর্য সেন ভাবতেও পারেননি, শহর থেকে একটা মেয়ে রাতের অন্ধকারে অভিভাবকদের ফাঁকি দিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসবে! কিন্তু কল্পনা দত্ত এসেছিলেন। সারা দিন বৃষ্টি হয়েছে মুষলধারে। পথঘাট জলকাদায় ভরা। রাত প্রায় ন’টায় দুজন কর্মী গ্রামের পথে হাঁটিয়ে তাঁকে নিয়ে এল একটা বাড়িতে। ঘরে ঢুকেই মাস্টারদাকে প্রণাম করলেন কল্পনা। কাপড়চোপড় জলে ভেজা, কিন্তু মুখে এতটুকু ক্লান্তি নেই। মাস্টারদার সঙ্গে দেখা হবে, কথা বলবেন, এই আনন্দেই তিনি বিভোর। যাওয়ার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল আরও জোরে। মাস্টারদা বুঝতে পেরেছিলেন, এই মেয়ের মনের জোর অসাধারণ।
কল্পনার পরে এলেন রানি। পোশাকি নাম প্রীতিলতা। কল্পনা বলেছিলেন, ‘‘রানি পড়াশুনায় খুব ভালো। সবসময় পড়াশুনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।’’ ১৯৩২ সাল। ধলঘাটের সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে তখন আত্মগোপন করে আছেন সূর্য সেন। একটু এগোলেই পুলিশ ক্যাম্প। রাত ছাড়া বাইরে বেরোনোর উপায় নেই। মে মাসের অসহ্য গরমে টিনের দোতলার অন্ধ কুঠুরিতে সারা দিন ছটফট করে কাটাতে হয় তাঁকে। রাত দশটা বেজে গেছে। প্রীতিলতা এলেন। তাঁকে আগেই নির্মল সেন বলেছিলেন, ‘‘মাস্টারদার সঙ্গে কথা বলো। এই মানুষটি কিন্তু অতল। ওঁর তল পাবে না। আমাদের মতো মানুষ ঢের পাবে। কিন্তু এঁর মতো পাবে না।’’ আর রানিকে প্রথম দেখে মাস্টারদার মনে হয়েছিল: ‘দেখলাম তাঁর মধ্যে অহঙ্কারের লেশমাত্র নেই। মনে হল, একজন ভক্তিমতী হিন্দুর মেয়ে হাতে প্রদীপ নিয়ে আরতি দেবার জন্য দেবতার মন্দিরে ভক্তি ভরে এসে দাঁড়িয়েছে।’ মাস্টারদা বলেছিলেন, ‘‘শুনেছি অনেক বার তুমি গিয়েছ রামকৃষ্ণের কাছে। আজ তোমার মুখে শুনব ওর কথা।’’ ছোট বোন অমিতা, এই পরিচয় দিয়ে মৃত্যুপথযাত্রী বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে অনেক বার দেখা করেছিলেন প্রীতিলতা। রামকৃষ্ণের ফাঁসির পরই তিনি কলকাতা ছেড়ে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন।
মাস্টারদাকে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘মেয়েদের আপনারা দলে নিতে চাইতেন না কেন দাদা? তাঁরা কি দেশসেবার যোগ্য নন?’’ মাস্টারদা জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘না, দেশসেবার কঠিন কর্তব্য থেকে মেয়েদের বঞ্চিত করা চলে না। দেশসেবায় নরনারী ভেদ নেই।’’ মাস্টারদার পাশে তখন রাখা আয়ারল্যান্ডের বিপ্লবী ড্যানিয়েল ব্রিন-এর সেই বিখ্যাত বই, ‘মাই ফাইট ফর আইরিশ ফ্রিডম’। বইটা পড়ার জন্য হাতে তুলে নিয়েছিলেন প্রীতিলতা। মাস্টারদার নির্দেশেই রানি গৃহত্যাগ করেন। সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয় সেই খবর, ‘চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার ধলঘাটের শ্রীমতী প্রীতি ওয়াদ্দেদার গত ৫ জুলাই, মঙ্গলবার, চট্টগ্রাম শহর হইতে অন্তর্ধান করিয়াছেন। তাঁহার বয়স ১৯ বৎসর। পুলিশ তাঁহার সন্ধানের জন্য ব্যস্ত।’ অন্তর্ধানের পর প্রীতিলতা ছিলেন পড়ৈকড়া দাতব্য হাসপাতালের চিকিৎসক হেমন্তকুমার ঘোষের বাড়িতে, তাঁর শ্যালিকা পরিচয়ে। হেমন্তবাবুর বাড়ি থেকেই তিনি রওনা দেন সূর্য সেনের গোপন আস্তানার উদ্দেশে। নৌকো কর্ণফুলী নদী বেয়ে খালের মধ্যে ঢুকে পড়ৈকড়া গ্রামের গোপন ঘাটে এসে পৌঁছয় যখন, তখন রাত দশটা বেজে গেছে। নির্মল সেন বলেছিলেন, ‘‘মাস্টারদা কারও কাছে কিছু চান না। ওঁকে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। এক-এক সময় টাকাপয়সার চিন্তায় আমার ঘুম হয় না, আর মাস্টারদা শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে পড়েন। ঠিক একটি ছোট ছেলের মতো, আমার ভারী চমৎকার লাগে।’’
মাস্টারদা রানিকে বলেছিলেন, পলাতক এই জীবনে অনেক কষ্ট তোমায় সহ্য করতে হবে। রমণী চক্রবর্তীর বাড়িতে থাকার বন্দোবস্ত হয় প্রীতিলতার। ঠিক হয়, ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, ইউরোপিয়ান ক্লাবে প্রীতিলতার নেতৃত্বেই আক্রমণ করা হবে। মাস্টারদার সে দিন মুসলমান চাষির বেশ। পরনে লুঙ্গি, কাঁধে গামছা, খালি গা। চলে যাওয়ার আগে প্রীতিলতা বলেছিলেন, ‘‘আমি কিন্তু আর ফিরে আসব না দাদা। এক জনকে তো জীবন দিয়েই শুরু করতে হবে। মানুষ মনে করে, মেয়েরা অক্ষম, মেয়েরা দুর্বল। ভ্রান্ত এই ধারণা ছিন্ন করার সময় এসেছে। তা হলেই আমার বিশ্বাস, বাংলার বোনেরা দুর্বলতা ত্যাগ করবে, হাজারে হাজারে যোগ দেবে বিপ্লবী সংগ্রামে।’’ প্রীতিলতার মৃত্যুর পর সূর্য সেন লিখেছেন, ‘সাজিয়ে দিয়ে যখন করুণভাবে বললাম, তোকে এই শেষ সাজিয়ে দিলাম। তোর দাদা তো তোকে জীবনে আর কোনোদিন সাজাবে না, তখন প্রতিমা একটু হেসেছিল। কী করুণ সে হাসিটুকু!’
সূর্য সেনের গ্রামের নাম ছিল নয়াপাড়া। পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে কর্ণফুলী নদী। ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ জন্ম তাঁর। পাঠশালার শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হন নয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। আর সেখানেই ভাল লেগে গিয়েছিল মাস্টারমশাই হেমেন্দ্রবাবুকে। তিনি গলা ছেড়ে আবৃত্তি করতেন নবীনচন্দ্র সেনের দেশাত্মবোধক কবিতাগুলি। তাঁর ঘরের দেওয়ালে টাঙানো থাকত বিদ্যাসাগরের ছবি। সূর্য সেন পরে পড়তে এলেন চট্টগ্রাম শহরে। তৎকালীন ভারতের পূর্ব সীমান্তের অন্যতম প্রধান বন্দর, সিপাহি বিদ্রোহের সেপাইরা এই শহরের বুক চিরে এক সময় চলে গিয়েছিলেন ত্রিপুরার দিকে। ছাত্র সূর্যের হাতে আসে মরাঠি লেখক সখারাম গণেশ দেউস্করের ‘দেশের কথা’। মন দিয়ে তখন তিনি পড়ছেন বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ও। স্কুলের পাঠ শেষ করে ভর্তি হলেন কৃষ্ণনাথ কলেজে। ভাগীরথীর তীরে, জেলখানার পাশে কলেজ। অধ্যক্ষ শশিশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় পড়াতেন উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ। পড়ানো হত গিবন-এর ‘দি ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অব দ্য রোমান এম্পায়ার’। পাশাপাশি তিনি পড়েন আয়ারল্যান্ডে বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস, বিপ্লবী জন মিচেলের আত্মত্যাগের কাহিনি, ইস্টার বিদ্রোহের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে ছুটে গেছেন বন্যাবিধ্বস্ত এলাকায়। ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বন্যাত্রাণে।
উমাতারা উচ্চ বিদ্যালয়ে এর পর তিনি শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছেন। ছাত্রদের মুখে মুখে হয়ে উঠেছেন, ‘মাস্টারদা’। কিছু দিন পর গোটা ভারতে বিপ্লবী আন্দোলন কেমন চলছে, তা দেখার জন্য রওনা দেন গুয়াহাটির দিকে। বেশ কয়েক মাস অসমে কাটিয়ে লখনউ এসে যখন পৌঁছন, তখন উত্তর ভারতের বিপ্লবী আন্দোলন স্তিমিত হয়ে এসেছে। লখনউ থেকে কলকাতা, এসে উঠলেন ওয়েলিংটন স্কোয়ারের গোপন আস্তানায়। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হল, ১৯২৬ সালের ৮ অক্টোবর। পাঠিয়ে দেওয়া হল রত্নগিরি জেলে। পাশেই আরব সাগর। সেই সময় ‘ভারতী’তে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’। শোভাবাজারের গুপ্ত আস্তানায় হ্যারিকেনের আলোয় রাত জেগে চলত ‘পথের দাবী’ পড়া। ‘ভারতী’র জন্য থাকত সারা মাস ধরেই অপেক্ষা। রত্নগিরি জেলে বসে শরৎচন্দ্র ও তাঁর এই উপন্যাসের কথা খুব বলতেন মাস্টারদা। আর বলতেন, মহৎ সাহিত্য মনকে সজীব রাখে। ভালর প্রতি লোভ জন্মায় এ সব বই পড়ে।
১৯২৮ সালে স্ত্রী পুষ্পকুন্তলা টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে এক মাসের জন্য ছাড়া হয় তাঁকে। বিয়ের পর প্রথম রাতেই সদ্যবিবাহিতা পুষ্পকে নিজের স্বপ্ন, সাধনা, সঙ্কল্পের কথা বলে বিদায় নিয়ে চলে গিয়েছিলেন। তার পর দেখা হয়েছে কয়েক বার, কিন্তু পুষ্পর খবর নেওয়ার সুযোগ হয়নি, প্রয়োজনও বোধ করেননি। কৌমার্য আর বিপ্লব সূর্যের কাছে একাকার হয়ে গিয়েছিল। তিনি মনে করতে শুরু করেছিলেন, বিপ্লবীকে হতে হবে সন্ন্যাসীর মতো। ক্রোধ, লোভ, কাম থাকলে চলবে না। এক বুক অভিমান নিয়ে পুষ্প চলে গিয়েছিলেন। সারা দিন বনেবাদাড়ে ঘুরে বেড়াতেন, কারও নিষেধ শুনতেন না। শেষ চিঠিতে পুষ্প লিখেছিলেন, ‘তোমার দেওয়া দেবী চৌধুরাণী বইটা কাল রাতে শেষ করেছি।’ আঁকাবাঁকা হরফে আরও লেখা, ‘আমি যখন থাকব না, তখন টোনার দিকে একটু লক্ষ রেখো।’ টোনা, সূর্যের বড়দার ছেলে। পুষ্প সূর্যের বৌদিকে বলতেন, আমি কী তোমার মেজমশাইয়ের কাজে কোনও সাহায্যই করতে পারতাম না দিদি? সূর্যের পাঠানো বইগুলোর দিকে মাঝে মাঝে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতেন তিনি। চার বছরের অদর্শন হয়তো সূর্যের মধ্যে একটা প্রগাঢ় ভালবাসার বোধ তৈরি করেছিল। চিঠি, বই ইত্যাদি বিনিময় করতে শুরু করেছিলেন তিনি পুষ্পের সঙ্গে। পুষ্পও প্রশ্ন করেছিলেন, স্ত্রী কি ছাত্রী হতে পারবে না? কেন স্ত্রীর ওপর ভরসা রাখতে পারবেন না তাঁর বিপ্লবী স্বামী?
১৯২৮-এর ডিসেম্বর, কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে বসল জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র বসু।
মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা একযোগে দাঁড়ালেন সুভাষচন্দ্রের পক্ষে। ৬৪ দিন অনশনের পর বিপ্লবী যতীন দাসের মৃত্যু হলে, আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির আদলে চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হল ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহের পরিকল্পনা করলেন মাস্টারদা। প্রধান দুটি শত্রু ঘাঁটি, ‘অগজ়িলিয়ারি ফোর্স’-এর অস্ত্রাগার এবং পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার দখলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। যোগ দিয়েছিলেন মোট ৭৩ জন বিপ্লবী। জালালাবাদ পাহাড়ে এই বিপ্লবীদের সংগ্রাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। এর পরেই মাস্টারদার সঙ্গে যোগ দেন কল্পনা দত্ত ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। তত দিনে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করেছে, সূর্য সেনকে জীবিত বা মৃত ধরে দিতে পারলে দশ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। ধরা পড়ার পর তাঁর ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল।
জেলে মাস্টারদার সঙ্গী ছিল চারটি বই। গীতা, চণ্ডী, মহাভারত আর রবীন্দ্রনাথের ‘চয়নিকা’। খুব ভোরে উঠে ব্রহ্মসঙ্গীত গাইতেন বা স্তোত্রপাঠ করতেন। সকাল কেটে যেত গীতা পাঠে, দুপুরে পড়তেন মহাভারত। তাঁর চিঠিগুলি থেকে জানা যায়, পড়বেন বলে চেয়ে পাঠিয়েছেন জলধর সেন, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় এবং অনুরূপা দেবীর বই। প্রায় এগারো মাস জেলে থাকার পর তাঁর ফাঁসির রায় বেরোয়। জেলে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে বাড়ির লোকের দেখা করার অনুমতি দেয়নি ব্রিটিশ। ফাঁসির পরেও তাঁর দেহ দেখতে পেলেন না কেউ। ১৯৩৪ সালের ১১ জানুয়ারি ফাঁসি হয় সূর্য সেনের। জীবনের শেষ দিনগুলিতে মাঝে মাঝে মৃত্যুচিন্তা করতেন তিনি। এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘দার্শনিক এবং কবিরা মরণ জিনিসটাকে কত সুন্দরভাবে চিত্রিত করেছেন। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, মানুষ যেমন জীর্ণবস্ত্র পরিত্যাগ করে নূতন বস্ত্র গ্রহণ করে, সেরূপ আত্মা জীর্ণ শরীর ত্যাগ করে অন্য নূতন দেহ ধারণ করে। কবি বলছেন, মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান। মানুষ এত সুন্দর লেখা পড়েও উপলব্ধি করতে পারে না বলেই কি মৃত্যুকে ভয়ের জিনিস বলে মনে করে?’
জীবনের শেষ দিকে এক চিঠিতে, সব শারীরিক যন্ত্রণা তুচ্ছ করে সূর্য সেন লিখেছিলেন, ‘চার-পাঁচ দিন আগে একদিন সন্ধ্যার সময় একদৃষ্টে একমনে আকাশের দিকে চেয়েছিলাম। নির্মল জোৎস্নায় সমস্ত নীল আকাশ ভরে গিয়েছিল। অসংখ্য নক্ষত্র সুন্দর ফুলের মতো সারা আকাশে ফুটে রয়েছিল। গাছগুলি নীরবে যেন প্রকৃতির এই বিমল সৌন্দর্যের মধ্যে ডুবে গেল। মনে পড়ে গেল তাঁর কথা, যিনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন, যিনি আমাদের আনন্দের জন্য প্রকৃতির অনন্ত সৌন্দর্যের ভাণ্ডার খুলে রেখেছেন।… মৃত্যু আমার দরজায় করাঘাত করছে। মন আমার অসীমের পানে ছুটে চলেছে। এই আনন্দময়, পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমি তোমাদের জন্য কি রেখে গেলাম? মাত্র একটি জিনিস, তা হল আমার স্বপ্ন, স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন।’