গত দু’দিন ধরেই রাজ্যের সংক্রমণের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যবাসীর। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন পাঁচশোরও বেশি মানুষ। সুস্থতার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও কোনওভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না মারণ ভাইরাসের সংক্রমণকে। আর রবিবার তো সেই সংখ্যাটা বাংলার অতীত সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল।
এদিন স্বাস্থ্যদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়েছে ৫৭২ জনের শরীরে। যা এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ফলে একলাফে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেল। কোভিড-১৯ আক্রান্ত ১৭ হাজার ২৮৩ জন। তার মধ্যে শুধু কলকাতাতেই একদিনে ১৭১ জনের শরীরে ভাইরাসের হদিশ মিলেছে। শুধুমাত্র এ শহরেই সংক্রমিত ৫,৫৭৩ জন। উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নতুন করে অ্যাকটিভ কেসের উর্ধ্বমুখী গ্রাফ। বর্তমানে রাজ্যের অ্যাকটিভ কেস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৫১-তে।
আনলক ওয়ানে প্রায় প্রতিদিনই একটু একটু করে বেড়েছে রাজ্যের সুস্থতার পরিমাণ। কিন্তু শুক্রবার যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সুস্থতার হার ৬৫ শতাংশেরও বেশি। সেখানে রবিবার কিন্তু সেই গ্রাফ সামান্য নিম্নমুখী। একদিনে রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪০৪ জন। যার মধ্যে কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনাকে হারিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১১ হাজার ১৯৩ জন। সুস্থতার হার ৬৪.৭৬ শতাংশ।
করোনাজয়ীরা যেমন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহস জোগাচ্ছে, তেমনই এখনও এই ভাইরাস কাড়ছে সাধারণের প্রাণ। একদিনে রাজ্যে করোনার বলি ১০। যার মধ্যে তিলোত্তমাতেই মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনার কামড়ে মৃত ৬৩৯ জন। কেবলমাত্র কলকাতার মোট সংখ্যা ৩৬৬। সেরো সার্ভে রিপোর্টও বলছে, অন্যান্য জেলার থেকে রাজ্যে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি কলকাতায়। এই বাড়তে থাকা সংখ্যা ফের সেই ছবিটাই স্পষ্ট করে তুলল।
তবে সংক্রমণ যাতে দ্রুত চিহ্নিত করা যায়, তার জন্য নিয়মিত বাড়ছে নমুনা টেস্টও। স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৫৬৩ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯০৬ টি নমুনা টেস্ট হয়েছে রাজ্যে।