মানুষের দুয়ারে পৌঁছনোর পরিবর্তে রেশন দ্রব্য পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুয়ারে রেশন নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মারধর ও দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাটে।
বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া থানার আটুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটিয়াহাটের। এখানে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, রেশন ডিলার গফফর সরদার পঞ্চায়েতের সদস্য আনারুল সরদারের বাড়িতে রেশনের যাবতীয় মাল দিচ্ছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাস্তা অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বসিরহাট-স্বরূপনগর রোডের কাটিয়াহাট এলাকায় দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে তৃণমূলের এক গোষ্ঠী। পাল্টা অপর গোষ্ঠী তৃণমূল কর্মীদের মারধর করে ও দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তাল পরিস্থিতির তৈরি হয়। প্রায় ৩০ মিনিট রাস্তা অবরোধের ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এলাকায়। অকুস্থলে বাদুড়িয়া থানার পুলিশ।
এই ঘটনার জেরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল আরেকবার। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সাহেব সরদারের অভিযোগ, রেশনের মাল কেন পঞ্চায়েত সদ বাড়ি থেকে বিতরণ করা হবে? তাঁদের অভিযোগ, “দুয়ারে রেশন প্রকল্পে রেশন ডিলারের উচিত গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার। কিন্তু উনি পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি গিয়ে রেশনের মাল চুরি করছেন।” “আমাদের ছেলেরা ক্যামেরায় সেই দৃশ্য বন্দি করলে তাঁদের ক্যামেরা ছাড়িয়ে নিয়ে মারধর করা হয়। মাল চুরি করল। সেই চুরির মাল ধরলাম। আবার মার-ও খেলাম!” মন্তব্য তৃণমূল নেতার।
তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীর দাবি, দুয়ারে রেশনের জিনিস দেওয়ার কথা মানুষের বাড়ি বাড়ি। কিন্তু তা কেবল রেশন ডিলার পৌঁছে দিচ্ছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে। তাঁরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর খান বলে অভিযোগ। এর পর তাঁরা পথ অবরোধে নামেন। তাঁদের দাবি, রেশন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। তার পর এলাকায় শুরু হয় অবরোধ। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।
এদিকে আটুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আনারুল সরদার বলেন, “পরিকল্পনা ও চক্রান্ত করে আমাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ ঘিরে যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি হয়েছে কাটিয়াহাট এলাকায়।
রেশন ডিলারের অবশ্য দাবি, রাস্তাতেই তাঁরা রেশনের জিনিস বিলি করছিলেন। কিন্তু বাধা দেয় তৃণমূলের একাংশ। তাঁর কথায়, সরকারি মাল চুরি হয় নাকি! গন্ডগোল হয়েছে সেটা কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা এক নেতার জন্য। তাঁর দাবি, সুষ্ঠুভাবেই রেশন বিলি করছেন তাঁরা। পুরো ঘটনার তদন্তে পুলিশ।