নীতি বদলে নিজস্ব কারখানায় তৈরি করার বদলে এবার বেসরকারি সংস্থার থেকে গোটা ট্রেন কিনতে চায় ভারতীয় রেল। এমনই দাবি করেছে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম। সেই খবরে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ সি অঙ্গদি এবং উচ্চপদস্থ রেলকর্তারা এনিয়ে বৈঠক সেরে ফেলেছেন। সেই বৈঠকে বেসরকারি সংস্থার থেকে রেডিমেড ট্রেন কেনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও ওই খবরে দাবি করা হয়েছে।
এখন ভারতে মোট তিনটি কারখানায় ট্রেন তৈরি হয়। চেন্নাইয়ের ইনটিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি, রায়েবেরিলির মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি এবং কাপুরতলার রেল কোচ ফ্যাক্টরিতে ভারতীয় রেলের বগি তৈরি হয়।
এখন এই সব কারখানায় উৎপাদন কমিয়ে বেসরকারি সংস্থার থেকে গোটা ট্রেন কিনতে চায় রেল। এনিয়ে গত সপ্তাহেই নয়াদিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আলোচনার মূল বিষয়ই ছিল প্রয়োজনীয় ইএমইউ এবং এমইএমইউ কোচ বেসরকারি সংস্থার থেকে কেনা হবে। রেলমন্ত্রকের এক কর্তা এই ব্যাপারে ওই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রেনের অংশ বিশেষ নয়, একেবারে গোটা রেডিমেড ট্রেন কেনা হবে।
এখন অনেক বেসরকারি সংস্থার থেকে ট্রেনের যন্ত্রাংশ কেনা হলেও রেলের নিজস্ব কারখানাতেই তৈরি হয় ট্রেন। এখন ভাবা হচ্ছে যন্ত্রাংশ না কিনে যদি রেডিমেড ট্রেন কেনা হয় তবে কী কী সুবিধা মিলতে পারে। যাদের থেকে যন্ত্রাংশ কেনা হয় তাদেরই ট্রেন তৈরি করতে বলা যায় কিনা সেটাই ভাবা হচ্ছে। রেলের দাবি, এই পদ্ধতি নিলে বিশ্বমানের প্রযুক্তি পাওয়া যাবে।
এখন যে নিয়ম চালু রয়েছে তাতে রেল কত বগি প্রয়োজন সেটা জানালে সেই মতো উৎপাদন হয় নিজস্ব তিন কারখানায়। নতুন নীতি কার্যকর হলে সেই পদ্ধতি বজায় রেখেই বেসরকারি সংস্থাকে প্রয়োজন মতো বরাত দেওয়া হবে। একই সঙ্গে দেখে নেওয়া হবে যে সংস্থাকে বরাত দেওয়া হচ্ছে তার উৎপাদন ক্ষমতা।
রেলের ওই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে যে আলোচনা হয়েছে তাতে আগামী তিন বছরে বেসরকারি সংস্থার থেকে ২ হাজার বগি, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনের জন্য ৩২০টি বগি এবং কলকাতা মেট্রোর জন্য ১২৪টি বগি কেনা হতে পারে। তবে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল ওই বৈঠকে জানিয়েছেন, যে সংস্থার থেকেই রেডিমেড ট্রেন কেনা হোক না কেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতি থেকে সরবে না রেল।
ভারতীয় রেলের ইতিহাসে অবশ্য বেসরকারি সংস্থার থেকে রেডিমেড ট্রেন কেনা একেবারে নতুন নয়। অতীতে দেখা গিয়েছে, চেন্নাই মেট্রো রেল অলস্টম সংস্থার থেকে ট্রেন কিনেছে। তবে এখনও পর্যন্ত ইএমইউ বা এমইএমইউ ট্রেন কেনার নজির নেই।