রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো আটকানোর ব্যাপারে আদালত ও পুলিশি নির্দেশ মেনে নেবে ‘রাষ্ট্রীয় বিহারি সমাজ’। শনিবার সংগঠনের তরফে একথা জানানো হয়।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও গতবার রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো আয়োজন বন্ধ করতে পারেনি রাজ্য সরকার। সরোবরের দূষণ নিয়ে পরপর দু’বছর তাদের মুখ পোড়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। তাই এবছর দু’মাস আগে থেকেই উৎসবের মরসুমে রবীন্দ্র সরোবরে দূষণ রুখতে উদ্যোগী হয় কেএমডিএ। বিকল্প জলাশয়ের ব্যবস্থা করছে কেএমডিএ। দক্ষিণ কলকাতায় ছট পুজো উদযাপনকারীদের জন্য রবীন্দ্র সরোবরের বিকল্প হিসেবে অন্য দুটি জলাশয় নির্দিষ্ট করে সেখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে কেএমডিএ’এর তরফে।
রাষ্ট্রীয় বিহারি সমাজ’-এর সভাপতি মণিপ্রসাদ সিং আজ বলেন, অক্টোবরের ২ তারিখ বিকালে এবং ৩ তারিখ সকালে ছট পুজো। এই রীতির সঙ্গে জলের গভীর সম্পর্ক আছে। অনেকেই গঙ্গায় যান। দক্ষিণ কলকাতার অনেকে রবীন্দ্র সরোবরে যেতেন। সরোবরে ছট পুজো বন্ধের ব্যাপারে আইনি লড়াইয়ে আমরাও শরিক হয়েছিলাম। কিন্তু আদালত এবং সরকার একটা নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবর্ত ব্যবস্থা করেছে সরকার। তাই সবার কাছে আবেদন করব এই নির্দেশিকা মানতে।
মণিবাবু বলেন, রাজ্যে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ বিহারি। আমরাও চাই পরিবেশ বাঁচুক। তবে, কেউ রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো করতে গেলে আমরা দায়িত্ব নেব না। পুলিশ-প্রশাসন যা করার করবে। রবীন্দ্র সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ। তাই সেখানে পরিবেশ রক্ষা-সহ যাবতীয় দায় তাদেরই বহন করতে হয়। সেক্ষেত্রে সরোবর দূষিত হলে বা সেখানকার পরিবেশের ক্ষতি হলে তার দায় বর্তায় তাদের উপরই। সে কারণেই এবার আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন।
সংস্থার এক কর্তা জানান, গত দু’বছর ছট পুজোর সময় রবীন্দ্র সরোবরে জলদূষণ আটকাতে আদালতের নির্দেশ মেনে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। আইন-শৃংখলার সমস্যা হতে পারে ভেবে বাধ্য হয়ে ছট পুজো উদযাপনকারীদের সরোবর ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবছর রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো সম্পূর্ণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য বিকল্প হিসেবে ইএম বাইপাসের লাগোয়া দুটি জলাশয়কে ছট পুজোর জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেএমডিএ’র ওই কর্তা।
এই দুটি জলাশয়ের একটি রয়েছে পাটুলিতে আর একটি বাইপাসের ধারে রুবি হাসপাতালের কাছে। যাতে নতুন জায়গায় ছট পুজো উদযাপনকারীদের অসুবিধা না হয় তাই ওই দুই জলাশয়ে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজে হাত দিয়েছে কেএমডিএ। জলাশয় দুটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয় ছট পুজোর আয়োজনকারীরা যাতে বিকল্প জায়গা সম্বন্ধে জানতে পারেন এবং সহজে সেখানে পৌঁছতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশের মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় কেএমডিএ’র এই উদ্যোগ সম্পর্কে প্রচার চালানো হয়েছে। উৎসবের সময় ওই দুই জলাশয় পৌঁছানোর জন্য বিশেষ বাস পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিকল্প এই উদ্যোগে চলতি বছর রবীন্দ্র সরোবরের চিরাচরিত দূষণ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে বলে কেএমডিএ কর্তারা আশাবাদী।