ভাটপাড়ায় ঘটনায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র৷তাঁর বক্তব্য,পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত এখনই পদত্যাগ করা৷
বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ায় নতুন থানা উদ্বোধন করার কথা ছিল ডিজির। তার আগেই শুরু হয় অশান্তি। ভাটপাড়া ফাঁড়ির ২০০ গজের মধ্যেই চলে বোমাবাজি। চলে গুলির লড়াই। পরিস্থিতি এতটা জটিল হয়ে ওঠায়, ভাটপাড়ার নতুন থানার উদ্বোধন করতে রওনা হয়েও, মাঝরাস্তা থেকে নবান্নে ফেরত যান ডিজি বীরেন্দ্র। এরপর পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্য়সচিব মলয় দে , স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি সহ শীর্ষ পুলিশ কর্তারা।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘ভাটপাড়ায় বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতী স্থানীয়দের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জগদ্দল এবং ভাটপাড়া থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার হয়েছে।” তিনি বলেন, অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (দক্ষিণবঙ্গ) সঞ্জয় সিংহকে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে জনের মৃত্যু হয় রামবাবু সাউ (২৬) ও ধরমবীর সাউ (৩০) নামে দুই যুবকের। গুরুতর জখম হয়েছেন ৫ জন।এখনও এলাকার পরিস্থিতি থমথমে।
এই ঘটনার পর সোমেন মিত্র বলেন, “এরাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে যে কিছু নেই সেটা ভাটপাড়ার ঘটনার ফের প্রমাণিত হল৷ গত কয়েকদিন ধরেই অশান্তির জন্য ভাটপাড়া খবরের শিরোনামে৷সব জানার পরও সেখানে পুলিশ শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ৷ পুলিশের নেত্রী পুরো ব্যর্থ৷ যদি তিনি পরিস্থিতি সামলাতে না পারেন তাহলে তিনি এখনই পদত্যাগ করুক৷ এভাবে সাধারণ মানুষ মনে মরবে এটা তো হতে পারে না৷”
তিনি আরও বলেন, “সব দলগুলোর সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের পরও একই রকম হাল রয়েছে৷পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে একটা সাম্প্রদায়িক উদ্বেগ ছড়াচ্ছে৷এরকম চলতে থাকলে রাজ্যে আগুন জ্বলবে৷ এর দায় তখন মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে৷”
এদিকে, নবান্ন সূত্রে খবর, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভাটপাড়া এবং সংলগ্ন এলাকার জনজীবন স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্রুত এবং কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে দাগী অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে বলেছেন পুলিশকে।বৃহস্পতিবার বিকেলেই অপসারণ করা হয় বর্তমান কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরীকে। কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মনোজ ভার্মাকে। তিনি আইজি দার্জিলিং পদে ছিলেন।
উল্লেখ্য,ভাটপাড়ায় এতদিন পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। জগদ্দল থানার অন্তর্গত ছিল সেই ফাঁড়ি। ভোট পরবর্তী হিংসায় গত এক মাস ধরে উত্তপ্ত ভাটপাড়া। শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় বার বার ব্যর্থ হতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে জগদ্দল থানা ভেঙে ভাটপাড়া থানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভাটপাড়া ফাঁড়িটি-ই বদলে যাচ্ছে থানায়। নতুন থানার ওসি হওয়ার কথা ছিল রাজর্ষি দত্ত। কিন্তু সবই অশান্তির জন্য স্থগিত হয়ে যায়।