তাঁর পক্ষেই সম্ভব। এই গরমেও এনার্জিতে কমতি নেই ছিটেফোঁটাও। এক দিনে তিন তিনটে জনসভা করার পর মালদহ শহরের রাজপথে পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই পদযাত্রা নিয়েই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।

বৃহস্পতিবার যখন রাজ্যের তিন কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে, তখন মালদহের সামসি, পাকুয়াহাট এবং কালিয়াচকের সুজাপুরে জনসভা করেন মমতা। এরপর আসেন মালদহ শহরে। সেখানেই দুপুরে ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর জনসভা। বিকেলবেলা সেখানে পৌঁছেই মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের অভিযোগ, আগে থেকে অনুমতি ছিল না। কী করে মিছিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র মমতার পদযাত্রাকে কটাক্ষ করে বলেন, “দিদিমণি ভয় পেয়েছেন। তিনটে জনসভাতেও কাজ হয়নি বুঝতে পেরে অলিগলিতে মিছিল করছেন।” এরপরই তিনি বলেন, “এই মিছিলের অনুমতি ছিল না। ভোটের সময় ৪৮ ঘণ্টা আগে যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি নিতে হয়। তা না থাকা সত্ত্বেও কী করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আইন ভেঙে মিছিল করলেন? আমরা কমিশনে জানাব।” কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরীও একই অভিযোগ তুলেছেন মমতার বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের তরফেও কমিশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

আদৌ কি অনুমতি ছিল? জেলার রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আগাম অনুমতি নেওয়া ছিল। আটচল্লিশ ঘন্টা আগে আবেদন জানানো হয়েছিল। সম্ভবত গতকাল (বুধবার) অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

কিন্তু তৃণমূল বলছে হঠাৎ ঠিক হয়েছে মিছিল হবে। যে সে নেতা নয়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মালদহ জেলা সভাপতি কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলছেন এই কথা। তিনি বলেন, “আমি ছিলাম বামনগোলায় দলীয় কর্মসূচিতে। হঠাৎ দিদি ফোন করে বলেন, এই কৃষ্ণেন্দু তাড়াতাড়ি আয়। মিছিল করব।” কৃষ্ণেন্দুবাবু এমনিতেই হার্টের রোগী। দিদির ডাক কি আর সে সব মানে! হন্তদন্ত হয়ে বামনগোলা থেকে মালদহ শহরে আসেন তিনি। কৃষ্ণেন্দু নিজেই জানান, “দু’ঘণ্টা আগে ঠিক হয়েছে মিছিল। আগে থেকে কিছু ঠিক ছিল না। ঝড় বইয়ে দিয়েছেন দিদি।”

কৃষ্ণেন্দুর এই কথা শুনে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কে সত্যি বলছেন? ডিএম? নাকি কৃষ্ণেন্দু? এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “কৃষ্ণেন্দু যে ভাবে দু’ঘণ্টা আগে কর্মসূচি ঠিক হওয়ার কথা বলেছেন এবং ডিএম যে ভাবে আগাম অনুমতির কথা বলেছেন তাতে তো ঘোর সন্দেহ হচ্ছে। মনে হচ্ছে, অন্য কোনও কায়দা করে আবেদনপত্র করিয়ে নেওয়া হবে না তো! দ্রুত তদন্ত করুক কমিশন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.