আমরা সকলেই জানি যে, অসমে এন আর সি-র প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকরণ রাজীব গান্ধী শুরু করেন। ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির যে তারিখের ভিত্তিতে তা হচ্ছে সেটাও বর্তমান সরকার ঠিক করেনি। এই সরকারের আমলে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়-এর তত্ত্বাবধানে তা চূড়ান্ত সমাপ্তির পথে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশী মুসলিমদের অনুপ্রবেশ সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে জর্জরিত। পশ্চিমবঙ্গ তথা সার্বিকভাবে ভারতবর্ষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারী বিতারণের পক্ষে। তাই খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর তারা দাবি তোলে যে এবার ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গেও এন আর সি এবং পরবর্তী পর্যায়ে সারাদেশে এন আর সি চালু করা হবে।
ইন্দিরা-মুজিব চুক্তিতে উল্লেখিত তারিখের কারণে যাতে বাংলাদেশ থেকে আসা একজন হিন্দু শরণার্থী নাগরিকত্ব পেতে কোন অসুবিধা না হয়, তার জন্য যারা এন আর সির পক্ষে তারা লোকসভায় “নাগরিকত্ব সংশোধনী” বিল নিয়ে আসে। কিন্তু যারা এনআরসি-র বিপক্ষে তারাই নানা অছিলায় সেই বিলের বিরোধিতা করে। যারা এন আর সির পক্ষে তারা আসলে একটা সুস্পষ্ট দিশা নিয়ে চলছে। সারা বিশ্বে যেখানে যেখানে আর্থিকভাবে, শিল্প-বানিজ্য-শিক্ষা-কাজের বাজারের দিক থেকে উন্নত দেশের পাশে অপেক্ষাকৃত কম উন্নত দেশ আছে যা মূলত স্থল-সীমানা দ্বারা চিহ্নিত, সেখানেই জল যেমন উঁচু থেকে নিচের দিকে প্রবাহিত হয় তেমনই অনুন্নত দেশ থেকে উন্নততর দেশে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, বসবাস ইত্যাদির জন্য মানুষের প্রবাহ শুরু হয়। একে Socio-economic Migration বা আর্থসামাজিক স্থানান্তরণ বলা হয়। এই সমস্যার জন্যই আমেরিকা মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন ভারতবর্ষ নিজেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। স্বাধীনতার এতো বছর পরেও বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে; বহু মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি; গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি; স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যতটা ব্যয় করা দরকার তা করা যাচ্ছে না; শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত অনেক বেশি। এমতাবস্থায়, প্রতিবেশী দেশের কোটি কোটি মানুষের দায়িত্ব নেওয়ার বিলাসিতা কি ভারত দেখাতে পারে? নিজের দেশের বৈধ নাগরিকদের প্রতি দায়িত্ব পালন না করে, অবৈধ মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের হাততালি কুড়ানো উচিত কি? এটা একমাত্র নোবেল শান্তি, ম্যাগ সেসে বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়ার লালসা যার আছে সেই করতে পারে। এই মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা এক শ্রেণীর রাজনীতির কারবারিদের সৌজন্যে রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার লিস্টে নাম তোলার ফলে দু টাকা কেজি চাল, উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস, কম সুদে গৃহঋণ, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ বীমা যোজনা এবং রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে যত শ্রী প্রকল্প আছে তার অন্যায় সুবিধা পাচ্ছে। ভ্যান ও টোটো চালক, কারখানার শ্রমিক, বাড়ির কাজের-রান্নার লোক থেকে ফেরিওয়ালা- সমস্ত অসংগঠিত ক্ষেত্রে তারা স্থানীয় বৈধ নাগরিকদের (যাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান দুই আছে) কাজে ভাগ বসাচ্ছে।
এছাড়াও সমস্যা শুধু আর্থসামাজিক নয় সমস্যা দেশের অখন্ডতা ও সুরক্ষার। এই মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা সাম্প্রদায়িক জিহাদী উন্মাদনার বিষে ভরপুর। এরা দ্রুত আগাছার মতো বংশবিস্তার করে যে দেশ তাদের আশ্রয় দিচ্ছে সেই দেশেরই সীমান্তবর্তী স্থানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পৃথক হোমল্যান্ড দাবী করবে। আরো এক বা একাধিক কাশ্মীর তৈরি হবে। এটা ইতিহাস স্বীকৃত যে, অখণ্ড ভারতের যে সব অংশ মুসলিম বহুল হয়েছে, সে সব অংশ ভারতের বাইরে চলে গিয়েছে। যেমন গান্ধার (বর্তমান আফগানিস্তান), পাকিস্তান ইত্যাদি। হায়দ্রাবাদ চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু সীমান্তবর্তী না হওয়ায় তা সফল হয়নি। এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশ জুড়ে এরা নাশকতামূলক কাজ করে। খাগড়াগড়, কালিয়াচক সহ অজস্র ঘটনার সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গবাসী।
অন্যদিকে এন আর সি বিপক্ষে থাকা রাজনীতির কারবারি ও দুর্বুদ্ধিজীবীরা খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রচার চালায় যে, যারা এন আর সি-র পক্ষে তারা বাঙালি বিরোধী। এন আর সি-র নাম নিয়ে তারা হিন্দু শরণার্থীদের তাড়িয়ে দেবে। এন আর সি-র পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে বললে আপনাকে হিন্দুত্ববাদী, সাম্প্রদায়িক বলা হবে। কিন্তু যারা বিরুদ্ধে বলছে তারাই আসলে চূড়ান্ত প্রাদেশিক বা আঞ্চলিকতাবাদী। তারা দেশের স্বার্থের কথা না ভেবে বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের বাঙালি আবেগের আড়ালে এদেশের নাগরিকের তকমা দিয়ে বাঙালি প্রাদেশিকতা, আঞ্চলিকতার বীজ বুনছে। এদের ধামাধরা দুর্বুদ্ধিজীবী, যারা জাতীয়তাবাদকেও গালি দেয়, তারাই আবার এদের এই আঞ্চলিকতাবাদ বা খন্ডিত-জাতীয়তাবাদের পক্ষে কলম ধরে।
রাজনীতিবিদরা নয় তোষণের মাধ্যমে ভোট পেতে চায়, কিন্তু বুদ্ধিজীবীরা?
আসলে এ সব দুর্বুদ্ধিজীবী না তো বাঙালি, না হিন্দু। এদের মূল ভাবনা অর্থ ও প্রতিষ্ঠা। এদের সাহিত্য, চলচ্চিত্র, গান সবই বাংলা ভাষা কেন্দ্রিক। এপার বাংলা ওপার বাংলার কথা বলে এরা আসলে দুই বাংলারই বাংলাভাষী মুসলিমদের মন জয় করতে চায়, যাতে এদের চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও গানের দর্শক, শ্রোতা, পাঠক ও ক্রেতা বাড়ে এবং তার সাথে এদের উপার্জন ও প্রতিষ্ঠাও বাড়ে। তাই বাঙ্গালিত্ব বজায় রেখে বৃহত্তর হিন্দু ভাবনার পরিবর্তে এরা বাঙালি হিন্দু কে সংকীর্ণ বা আঞ্চলিক বাঙালি পরিচয়ে আটকে রাখতে চায়। যাতে মুসলিমরা সন্তুষ্ট থাকে এবং এদের ব্যবসায় ভাঁটা না পড়ে। কিছুদিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়েছিল যে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ছবির আমদানি কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অনেক সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার মুখে। তাহলে বুঝুন এপার বাংলার চলচ্চিত্র ওপার বাংলায় কী বিপুল ব্যবসা করে।
শ্রীরামের সময়ের বহু আগে থেকে সারা দেশে প্রচলিত দেবী দুর্গার পূজা ব্রাত্য করে শ্রীরাম প্রচলিত ‘অকাল বোধনের’ পূজা বাঙালি হিন্দুর গর্বের ও শ্রেষ্ঠ উৎসবে পরিণত হয়েছে, তখন বাঙালি হিন্দুদের খাওয়ানো হচ্ছে যে রাম নাকি হিন্দি বলয়ের। বাংলায় আবার ‘জয় শ্রী রাম’, ‘রাম নবমী’ কেন?
জয় গোস্বামী ‘এই সময়ে’ (১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার) লিখেছেন যে বিজেপি সমর্থকরা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেয়। বিজেপি এই অভিযোগের ব্যাপারে কী করবে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমার বক্তব্য হল, শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, অরবিন্দ, সুভাষ চন্দ্র ও শ্যামাপ্রসাদ কি বাঙালি ছিলেন না? যারা নকশাল আমলে মূর্তি ভেঙেছিল তারা কি অবাঙালি ছিলেন? শ্রীরামকৃষ্ণ মৃগী রোগী, সমকামী; বিবেকানন্দ চাকরি না পেয়ে সন্ন্যাস নেন; সুভাষচন্দ্র তোজোর কুকুর; অরবিন্দ ব্যর্থ বিপ্লবী ইত্যাদি যারা বলেছিল, সেই বঙ্গীয় বামপন্থীরা কি অবাঙালি? শ্যামাপ্রসাদ এর মৃতদেহ যখন কাশ্মীর থেকে কলকাতায় আনা হয়, তখন মানুষের সীমাহীন আবেগ ও ক্ষোভ কে চাপা দেওয়ার জন্য যারা অতি ধূর্তামি ও নীচতার পরিচয় দিয়ে এক পয়সার ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করেছিল, তারা কি অবাঙালি ছিল? তখন কি বাঙালির মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়নি।
বাঙালি মনীষার অপমানকারী সেই বামপন্থীদের যখন পশ্চিমবঙ্গবাসী প্রায় ৩৫ বছর ক্ষমতায় রাখে, তখন কি বাঙালি অস্মিতার অপমান হয় না? যে দুর্বুদ্ধিজীবীদের মনে হঠাৎ বাঙালিয়ানা চাগাড় দিয়ে উঠেছে, তারা তখন বাঙালি মনীষার এই অপমানের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন কি? মহারাষ্ট্রের মাটিতে যে সংগঠনের জন্ম সেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের একজন কার্যকর্তা স্বর্গীয় একনাথ রানাডে সারা দেশ ঘুরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মাত্র এক টাকা করে নিয়ে কন্যাকুমারীতে বিবেকানন্দ স্মারক তৈরি করেন। তিনি কি বাঙালি ছিলেন? আর বাঙালি জ্যোতি বসু সরকারের সে ব্যাপারে কি অবদান ছিল, তা উৎসাহীরা অতীত তত্ত্ব ঘাটাঘাটি করলে জানতে পারবেন। সাদা ফিনফিনে ধুতি আর কলার বিহীন পাঞ্জাবি পরলেই বাঙালি হওয়া যায় না।
বিহারে একটি অনুষ্ঠানে এসে নেহরু এমন কথা বলেন যার অর্থ হয়, যে ক্ষুদিরাম সন্ত্রাসবাদী ছিলেন। সেই রাগে বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রীকৃষ্ণ সিং যতদিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, নেহরুকে বিহারে কোনও উপলক্ষে আর আমন্ত্রণ জানাননি। তিনি কি বাঙালি ছিলেন? সেই রাগে বাঙালি কংগ্রেসিরা নেহরুকে আজীবনের জন্য আর বাংলায় আমন্ত্রণ জানাননি এরকম ঘটনা কারো জানা আছে কি? “প্রতিবছর ১১ আগস্ট, ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যু দিনে কারাগারের মধ্যে হয় স্মরণ অনুষ্ঠান, ফুল মালা দিয়ে সাজানো হয় ছোট্ট সেল ও ফাঁসিরস্থল। শ্রদ্ধা জানান পুলিশকর্মী থেকে জেলাশাসক। বিহার তাঁকে ভোলেনি, কিন্তু বীর বিপ্লবীকে নিয়ে বাংলায় সেই আবেগ কোথায়?… গত সাত দশক পরিবার বা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও অংশগ্রহণ না থাকলেও, এতকাল ধরে ধারাবাহিক ভাবেই বিহারে সরকারি স্তরে এই স্মরণ-শ্রদ্ধাঞ্জলি মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে”। (সুত্রঃ আনন্দবাজার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, রবিবাসরীয়- শ্রী দীপঙ্কর ঘোষ)। এই বাঙালি দুর্বুদ্ধিজীবীদের কলম থেকে ক্ষুদিরাম স্মরণে কিছু বের হয় না কেন? কারণ ক্ষুদিরাম জাতীয়তাবাদী ছিলেন। অর্থাৎ বাঙালি মনীষিদের যখন কিছু বাঙালি অপমান করেছে, তখন অবাঙালিরা সম্মান দিয়েছে। আর বাঙালি দুর্বুদ্ধিজীবীরা অপমান বা অবহেলাকারীদের দয়া-দাক্ষিণ্য পাওয়ার জন্য তাদেরই হয়ে নিজেদের বুদ্ধি বিক্রি করছে।
জয় গোস্বামী লিখেছেন, বাঙালিরা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে। স্বাধীন চিন্তা হলেই যে সেটা শুভ হবে তার কোনও মানে আছে কি? স্বাধীন চিন্তা কি আত্মঘাতী হতে পারেনা? বাঙালির স্বাধীন চিন্তার ফলে এই বাংলায় বিগত প্রায় ৪০ বছর ধরে পার্টি ক্যাডার নামক আগাছার চাষ হচ্ছে। বাঙালির স্বাধীন চিন্তার ফলে এখানকার শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। বামফ্রন্টের আমলে অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তের স্বাধীন চিন্তার ফসল ছিল গ্রামে গ্রামে দেশি মদের দোকান। আর এখন চপের দোকান এই বাংলার যুবক-যুবতীদের সম্বল। তারা দলে দলে কাজের সন্ধানে হরিয়ানা থেকে শুরু করে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ইত্যাদি রাজ্যে চলে যাচ্ছে। এতে বাঙালির আত্মমর্যাদায় ঘা লাগে না? বাঙালিয়ানায় সম্পৃক্ত সুশীল সমাজ কি এ ব্যাপারে কলম ধরেছেন যে বাংলার এই হাল কেন?
জয় গোস্বামী লিখেছেন যে পশ্চিমবঙ্গবাসীদের এই হিন্দুত্ব নির্ভর রাজনীতির বিরোধিতা করা দরকার। অর্থাৎ জাতীয়তাবাদী হলে নিন্দনীয়, হিন্দুত্ববাদী হলেও নিন্দনীয়। কিন্তু প্রচন্ড প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক হলে আপনি স্বাগত। যুক্তি বলে, সাম্প্রদায়িকতা যেমন নিন্দনীয় তেমনই প্রাদেশিকতা, আঞ্চলিকতাও সমান ভাবে নিন্দনীয়। তা ভারতের বহুত্ববাদের বিপরীত।
তাই সম্প্রদায়, প্রাদেশিকতা, ভাষাগোষ্ঠী এসবের ঊর্ধ্বে উঠে যে কোনও সচেতন নাগরিক যদি দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দেন, তবে তারা সকলেই একমত হবেন যে, দেশের ভবিষ্যৎ আর্থসামাজিক সমস্যা ও তার নিরাপত্তার স্বার্থে আজ নয়তো কাল ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ সহ সারাদেশে এন আর সি প্রয়োজন। আশার কথা বাঙালি হিন্দুরা এন আর সি জুজুর বুজরুকি ধরে ফেলেছে। তাই জয় গোস্বামীদের মতো ধামাধরাদের মুখে ছাই দিয়ে ১৮ টি আসনে হিন্দুত্ব নির্ভর রাজনৈতিক দল জয়ী হয়েছে, যারা এন আর সি-র পক্ষে তীব্র প্রচার চালিয়েছিল।
আমরা তো সকলেই চাই যে, বাঙালি হিন্দু তার বাঙালিত্ব বজায় রেখেই হিন্দু বলতে গর্ববোধ করুন। তাই সময় এসেছে এই দুর্বুদ্ধিজীবীদের ব্রাত্য করার এবং বাংলা জুড়ে এমন এক পরিবেশ তৈরি করা যাতে বামপন্থী, সেকুলার এবং পেট্রো ডলার পুষ্ট মুসলিম তোষণকারীদের শেষ করে তাদের স্থানে শুধু হিন্দুত্ব নির্ভর রাজনীতিই নয়, বরং বৌদ্ধিক জগতেও হিন্দুত্ব নির্ভর সাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার বিকশিত হতে পারে; শ্রীচৈতন্য থেকে শুরু করে বিবেকানন্দ, প্রণবানন্দের হিন্দুত্ব ভাবনা রসে সমাজকে জারিত করতে পারে। তবেই বোধহয় বাঙালি হিন্দু হিসেবে জ্ঞানতঃ বা অজ্ঞানত এই জাতীয়তাবিরোধী, বাঙালি মনীষার অপমানকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে যে ভুল আমরা করেছি, তার প্রায়শ্চিত্ত সম্ভব। আশার কথা, বাঙালি হিন্দু তা অনেকটাই বুঝতে পেরেছে। আমরা সকলে আরো ভালো কিছুর আশায় রইলাম।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)
সুব্রত ভৌমিক
(লেখক দি ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অব ইন্ডিয়ার অ্যাসোশিয়েট সদস্য)