বাংলা বর্ষের প্রথম দিন তারাপীঠে উপচে পড়ল পুণ্যার্থীদের ভিড়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এদিন মন্দিরে ভিড় জমান রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। মা তারার পুজো দিয়ে অনেকে ব্যবসা শুরু করেছেন।
কথিত আছে সাধক বশিষ্ঠদেব সাধনা করে তারা মায়ের দর্শন পান। এরপর সপ্তদশ শতাব্দিতে রত্নাগড় অধুনা সাঁইথিয়া থানার রাতগড়ার বণিক জয়দত্ত সওদাগর বাণিজ্য করতে বেরিয়ে মৃত ছেলের প্রাণ ফিরে পেয়ে স্বপ্নাদেশে তারাপীঠ মহাশ্মশান থেকে মায়ের শিলামূর্তি উদ্ধার করে সেখানেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কালের নিয়মে উত্তরমুখী দ্বারকা নদীর জলে সেই মন্দির ভেঙে পড়ে। একাদশ শতাব্দীতে মল্লারপুরের বাসিন্দা মা তারার ভক্ত সোম ঘোষ শ্মশানে মায়ের দ্বিতীয় মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যা কালের নিয়মে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এরপর শুরু হয় মায়ের মূল মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ। সতেরোর দশকে মুর্শিদাবাদের নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর অধীনস্থ জমিদার ছিলেন উদয় নারায়ণ রায়। আবার তার অধীনস্থ ছিলেন মুর্শিদাবাদের এড়োয়াল নিবাসী বর্তমান ময়ূরেশ্বরের ঢেকার রাজা রামজীবন চৌধুরী জমিদারি আদায়কৃত টাকায় তিনটি মন্দির তৈরি করেন। কলেশ্বরের শিব মন্দির, ঢেকার রামসায়র দিঘি এবং তারাপীঠে তারা মায়ের মন্দির। কিন্তু সেই মন্দিরও ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর ১২২৫ বঙ্গাব্দে মল্লারপুরের জমিদার জগন্নাথ রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে মূল মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। অন্যান্য বছর মত এবারও তারাপীঠে বর্ষবরণ উৎসবে মেতেছেন পুণ্যার্থীরা।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “হালখাতার পাশাপাশি নিশি পুজোও হয়। দু’বার মা তারাকে ভোগ নিবেদন করা হয়। আরতিও হয় দু’বার”। মন্দিরে ভিড় হবে ধরে নিয়ে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে। বাংলা বছরের পুজো দিতে এসে রাজ্যের মঙ্গল চাইলেন মোনালিসা দত্ত, মুনমুন দত্ত, সোনালী ভরদ্বাজরা। তারা বলেন, “প্রতিবছর এই দিনটিতে পুজো দিতে আসি। পুজো দিয়ে মায়ের কাছে কামনা করি সারা বছর মানুষের মঙ্গল করো। সকলকে সুস্থ রাখো”।