শান্তনু সেন ও নির্মল মাঝির সম্পর্ক তৃণমূল রাজনীতিতে কারও অজানা নয়! এক পেশা, এক রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়েও দুজন পরস্পর বিরোধী বলেই পরিচিত। বৃহস্পতিবারও একই যাত্রা পৃথক ফল পেলেন শাসক দলের দুই চিকিৎসক নেতা। একজনকে দায়িত্বে আনা হল। অন্য জনকে সরিয়ে দেওয়া হল।
জোড়াসাঁকোর তৃণমূল বিধায়ক স্মিতা বক্সীকে সরিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী নির্মল মাজিকে এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান করা হল। অপরদিকে, আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রাজ্যসভার সাংসদ ডা: শান্তনু সেনকে। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে বরিষ্ঠ চিকিৎসক তথা মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারকে।
রাজনৈতিক দিক থেকে বিশ্লেষণ করলে এক্ষেত্রে নির্মল মাঝির “প্রমোশন” হয়েছে, ডিমোশন হয়েছে শান্তনু সেনের। কিন্তু বিষয়টিকে “প্রমোশন” বা “ডিমোশন”-র দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে নারাজ চিকিৎসক শান্তনু। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা স্বাস্থ্য দপ্তরের এই সিদ্ধান্তকে মাথা পেতে নিয়েছেন তিনি। শুধু এনআরএস-ই নয়। বর্তমানে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের রোগী কল্যাণ সমিতির মাথায় রয়েছেন নির্মল মাঝি।
তাই, তৃণমূল অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা হলেও এগিয়ে গেলেন নির্মল মাঝিই। গত সপ্তাহে চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর আচমকা এসএমএসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ঘটনায় নির্মল মাজি কে দায়ী করেছিলেন দলের একাংশ। সূত্রের খবর, সেদিন মুখ্যমন্ত্রী কালীঘাটের বাসভবন থেকে বেরিয়ে নবান্নের উদ্দেশ্যে গাড়ি রওনা হওয়া মাত্রই নির্মল মাঝির কথাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে এসে ছাত্রবিক্ষোভের সম্মুখীন হন।
আবার বাংলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের ঘটনায় ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ভূমিকাকে ভালো চোখে দেখেনি রাজ্য সরকার। যে সংগঠনের মাথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। মনে করা হচ্ছে সেই কারণেই এমন শাস্তির খাড়া নেমে এসেছে তাঁর ওপর।