উল্টোডাঙা উড়ালপুলের এয়ারপোর্টগামী অংশ খুলে গেলেও, অন্যদিকটি কবে খুলবে সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। কেউ বলছেন, দেড় মাস, কারও কথায় দু’মাস লাগবে এয়ারপোর্ট থেকে কলকাতাগামী অংশের ব্রিজ মেরামত হতে। ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্যই বন্ধ হয়ে গিয়েছে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের একটি দিক।
সূত্রের খবর, লেকটাউন থেকে ইএম বাইপাসগামী ব্রিজের অংশে আটটি পিলারে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। সেগুলো মেরামত করতে পিলারগুলোতে ৯৬টি লোহার বিম লাগাতে হবে। এই মেরামত এক-দু’দিনের কাজ নয়। সময় লাগবে কমপক্ষে দু’মাস। অন্যদিকে এয়ারপোর্টগামী ব্রিজের অংশ খুলে দেওয়া হলেও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে হাইটবারের উচ্চতা। যাতে কোনও ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে। কেবল হাল্কা, ছোট গাড়ির জন্যই এই অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানা যায় একাধিক ফাটল দেখা গিয়েছে উল্টোডাঙা উড়ালপুলে। নিরাপত্তার খাতিরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্রিজ। এরপর বৃহস্পতিবার উল্টোডাঙা উড়ালপুল পরিদর্শন করেন ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম। তাঁদের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই উড়ালপুলের এয়ারপোর্টগামী অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে উড়ালপুলের আরেকটি দিক খোলার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দেয়নি এই কমিটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র পায়ার ক্যাপেই নয়, ফাটল ধরেছে সেতুর একাধিক অংশে। সেই সব জায়গায় ইস্পাতের স্তম্ভ দিয়ে ভারবহনের ব্যবস্থা হবে। প্রথমে পায়ার ক্যাপে ইস্পাতের পাত জড়িয়ে শুরু হবে মেরামতির কাজ। ধীরে ধীরে হাত দেওয়া হবে অন্যান্য জায়গাতেও। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এই উড়ালপুল নির্মাণ করেছিল ম্যাকিনটোস বার্ন নামের একটি সংস্থা। তারাই ব্রিজ মেরামতির কাজ করবে।
মঙ্গলবার থেকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে উল্টোডাঙা চত্বরে। প্রভাব পড়েছে সল্টলেকের ভিতরের রাস্তাতেও। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অটোভাড়া। অটোচালকদের একাংশ রীতিমতো যাত্রীদের উপর জুলুম চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে অটোচালকরাও জানিয়েছেন, ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে তাঁদের দেড় ঘণ্টা লাগছে।
পুলিশ রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়ায় কম ট্রিপ হচ্ছে তাঁদের। ফলে রোজের ভাড়ায় পোষাচ্ছে না। তবে এয়ারপোর্টগামী ব্রিজের অংশ খুলে দেওয়ায় সামান্য হলেও স্বস্তি পেয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের দুর্ভোগ কমাতে কেষ্টপুর খালের ওপর একটি বেইলি ব্রিজ তৈরির কথা ভাবছে কেএমডিএ। এই বেইলি ব্রিজ দিয়ে কাজি নজরুল ইসলাম সরণি হয়ে বিধাননগরে ঢুকবে ছোট গাড়ি। এরপর পিএনবি হয়ে সেই গাড়ি পৌঁছে যাবে বিশ্ব বাংলা সরণিতে।