স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে বেলুড় মঠের বিশেষ অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পুরোটাই নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন। এই আইন চালু করার পর থেকেই দেশ উত্তাল বিরোধিতায়। অসম সহ উত্তর পূর্ব ভারতের আন্দোলন তীব্র আকার নিয়েছে। আর মোদীর সফর উপলক্ষে কলকাতা প্রবল উত্তপ্ত।
এমনই পরিস্থিতিতে বেলুড় মঠের ভাষণ থেকে প্রধানমন্ত্রী সিএএ আইন নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদকে জবাব দিলেন। তিনি বলেছেন “এই আইন নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। চার দিকে একটা ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।” এর পাশাপাশি তিনি বলেন, উত্তর পূর্ব ভারতের জন্য কোনও চিন্তা নেই। এই আইনের বলে সেখানে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে না।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তর পূর্ব ভারত প্রবল উত্তপ্ত। বারে বারে বিক্ষোভে রক্তাক্ত হয়েছে অসম সহ অন্যান্য রাজ্যগুলি। অসমেই গুলিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের যুক্তি, প্রতিবেশী মুসলিম বহুল দেশগুলি থেকে অ-মুসলিমদের ভারতে নাগরিকত্ব দেওয়ার আইনটি উত্তর পূর্বের জন্য বিপদ। কারণ, এই আইনের বলে, বাংলাদেশ থেকে বহু সংখ্যালঘু হিন্দু অসম সহ উত্তর পূর্বের অন্যান্য রাজ্যে ঢুকবেন। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ক্রমে সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে।
আর বেলুড় মঠ থেকে ভাষণে সেই উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রতিই বার্তায় মোদী বলেন, উত্তর পূর্ব ভারতের নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি অতুলনীয়। তাদের ভাষা, রুচিবোধ, ভৌগোলিক অবস্থান বিস্ময় তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, কোনওভাবেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের দ্বারা উত্তর পূর্ব ভারতের জনগণের ক্ষতি হবে না। এই আইন সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করতে যুব সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। তবে আইনটির বিরোধিতায় উত্তপ্ত পরিবেশের কারণে, তাঁর অসম সফর বাতিল করা হয়েছে আগেই।
এদিকে সিএএ আইনের প্রতিবাদে অসমের বিভিন্ন স্থানে এখনও চলছে বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ। অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বা আসু, কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি সরাসরি আইনের বিরোধিতায় সামিল। অসমে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি নেতৃত্বরা বারে বারে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও ও আক্রান্ত হয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল ও উত্তর পূর্বের বিজেপি শীর্ষ নেতা তথা অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘেরাও হয়েছিলেন। সেই ঘটনার রেশ ছড়ায় দেশের সর্বত্র।