বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ল মঙ্গলবার দুপুরে। ৩৫ জন কাউন্সিলর সেই প্রস্তাবে সই করেছেন বলে জানিয়েছেন কর্পোরেশনের চেয়ার পার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ৩৫ জন কাউন্সিলরের সই করা অনাস্থা প্রস্তাব কৃষ্ণাদেবী জমা দেন কর্পোরেশনের যুগ্ম কমিশনারকে।
আগামী কাল বিধাননগরের বোর্ড মিটিং রয়েছে। কিন্তু সেখানে এই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে না বলেই জানিয়েছেন কৃষ্ণাদেবী। পুর আইন ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “চিঠি জমা দেওয়ার পর অন্তত সাত দিন পর বোর্ড মিটিং করতে হয়। পরবর্তী যে প্রক্রিয়া তা কমিশনার এবং যুগ্ম কমিশনার করবেন।”
দীর্ঘদিনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা কৃষ্ণা চক্রবর্তী আরও বলেন, “এরপর দল একজনকে মেয়র পদপ্রার্থী করবে। তারপর আমরা তাঁকে ভোট দিয়ে জেতাব। আমরা দলের সৈনিক।”
একদিকে যখন চেয়ার পার্সনের ঘরে বসে অনাস্থা চিঠি জমা দেওয়ার তোড়জোড় চলছে, তখন মেয়রের চেম্বারে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করে সব্যসাচী দত্ত বললেন, “আগে চিঠি আসুক তারপর দেখা যাবে। যা হবে পুর আইন অনুযায়ী। তার একটুও এ দিক ও দিক হবে না।”
বিধাননগরের মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ৪১ জন। সব্যসাচীকে বাদ দিলেও বাকি ৫ জনের সই এখনও বাকি। এ ব্যাপারে কিছুটা বিদ্রুপের সুরেই বিধাননগরের মেয়র বলেন, “আমি ভাবলাম ৪০ জন সই করবে। ৩৫ জন করল। বাকি পাঁচজন কোথায়?” রবিবার দুপুরে তৃণমূলের ৩৬ জন কাউন্সিলর সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। সেই বৈঠকে সব্যসাচীকে ডাকা হয়নি। তা ছাড়া বৈঠকের পর ববি হাকিম বলেছিলেন, দল বিরোধী কাজের জন্য সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। সেই সঙ্গে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, বিধাননগর পুরসভার কাজও আপাতত ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় দেখবেন।
কিন্তু তার পর রাতে আবার দেখা যায়, সল্টলেকের এই সুইমিং ক্লাবে মুকুল রায়ের সঙ্গে নৈশভোজ করছেন সব্যসাচী। এ প্রসঙ্গে সোমবার ববি বলেন, “যে দল ভাঙছে, সব্যসাচী তাঁর সঙ্গে বসছে। যাওয়ার হলে চলে যাক। দু’নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না। সব্যসাচীর উচিত ছিল তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়ে এ সব করা।”
গতকালও অনাস্থা প্রসঙ্গে সব্যসাচী বলেছিলেন, “যে দিন ভোটাভুটি হবে, সে দিন দেখতে পাবেন।” এ দিনও চিঠি জমা পড়ার পর সল্টলেকের মেয়র বললেন, “এত তাড়াহুড়ো করলে কী করে হবে! দেখুন না কী হচ্ছে!”
তবে সব দেখে অনেকেই বলছেন, বিধাননগর বিড়ম্বনা এক্ষুণি এক্ষুণি থামার নয়। তা আরও কয়েকদিন চলবে। এখন দেখার, কবে আস্থা ভোটের তারিখ ঠিক করে বিধাননগরের পুরকর্তৃপক্ষ। সেখানে কী দাঁড়ায়।