টিকাকরণের আগে দ্বিতীয় পর্যায়ের মহড়া শুরু হচ্ছে দেশজুড়ে। ২ জানুয়ারি দেশের ৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকায় টিকার মহড়া তথা ড্রাই-রান হয়েছিল। আজ থেকে তিনটি ধাপে দ্বিতীয় পর্বের মহড়া চলবে। বাংলার ৬৯টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে টিকার মহড়া চলবে।
রাজ্য স্বাস্থ্যভবন জানিয়েছিল, আজই কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ চলে আসতে পারে বাংলায়। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী তথা প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের জন্য ৬ লাখ টিকার ডোজ চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। চূড়ান্ত পর্বের টিকাকরণের আগে আজ রাজ্যজুড়েই মহড়া চলবে। এখনও অবধি জানা গিয়েছে, প্রতি জেলায় তিনটি করে ক্লিনিকে টিকার ড্রাই-রান হবে। কলকাতার পাঁচটি হাসপাতালে মহড়া চলতে পারে।
সরকারি সূত্রে খবর, দেশের ৭৩৬টি জেলায় টিকার মহড়া হবে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও অরুণাচলপ্রদেশে দুই পর্বের মহড়া হয়ে গেছে, কাজেই সেখানে আর ড্রাই-রান হবে না। আজও টিকার মহড়া সরেজমিনে দেখবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন। দিল্লির বেশিরভাগ জেলাতেই চলবে মহড়া। মহারাষ্ট্রের ৩০টি জেলা ও ২৫টি মিউলিসিপ্যাল এলাকায় টিকার ড্রাই-রান হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ২৫ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী বেছে নেওয়া হয়েছে যাঁদের ওপরে টিকার ডামি-ট্রায়াল চলবে। এই ডামি-ট্রায়ালে অংশ নেবেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও।
টিকাকরণের মহড়ায় কো-উইন অ্যাপের ভ্যাকসিন মডিউল ও রেজিস্ট্রেশন মডিউলের আপডেট করা হবে। টিকার জন্য নাম নথিভুক্ত করা থেকে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কোড-যুক্ত সার্টিফিকেট নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে ঠিকঠাক পাঠানো যাচ্ছে কিনা, সেসবও খতিয়ে দেখা হবে।
টিকার অগ্রাধিকার যাঁরা পাবেন তাঁদের নাম নথিভুক্ত করতে হলে আইডি প্রুফ আগে দিতে হবে। নিজের পাসপোর্ট সাইজের ফটো, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট জব কার্ড, প্যান কার্ড, পাসবুক (ব্যাঙ্ক/পোস্ট অফিস), পাসপোর্ট, পেনশন ডকুমেন্ট, যেখানে চাকরি করেন সেখানেকার আইডি কার্ড, ভোটার কার্ড ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। টিকা নেওয়ার আগে তাদের মোবাইলে এসএমএস আসবে। সেখানে টিকা নেওয়ার দিন ও জায়গা বলা থাকবে।
টিকার রেজিস্ট্রেশনের কাজ হবে কো-উইন অ্যাপে। ১২ টি ভাষায় কাজ করবে ওই অ্যাপ। সেই সঙ্গে টিকাকরণের জন্য কাজে লাগবে আধার কার্ড।যিনি টিকা নেবেন তাঁকে আধার কার্ড আনতে বলা হবে। অনিয়ম এড়ানোর জন্য ওই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া আগামী দিনে বিশেষ হেলথ আইডেনটিটি কার্ড করারও পরিকল্পনা রয়েছে। যাঁরা টিকা নেবেন, তাঁদের ওপরে নজর রাখা হবে। এর ফলে কারও দেহে যদি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তাহলে জানা যাবে সঙ্গে সঙ্গে। যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের কাছে এসএমএস যাবে। মোট ১২ টি ভাষায় এসএমএস পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ দেওয়ার পরে একটি কিউ আর কোড নির্ভর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সেই সার্টিফিকেট মোবাইলে রাখা যাবে। এছাড়া যাঁরা ভ্যাকসিন নেবেন, তাঁদের সম্পর্কে ডিজি লকার নামে এক ডকুমেন্ট স্টোরেজ অ্যাপে। সেই সঙ্গে থাকবে হেল্পলাইন। তা সপ্তাহের সাতদিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।