সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি তবে ‘ইনফ্লুয়েন্সার’! নয়াদিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় সোমবার অমিত শাহর সঙ্গে তাঁর ছবির যে ফ্রেম তৈরি হবে, তা কি কোনও ভাবে প্রভাব ফেলতে পারে বাংলার ভোটে? সোমবার ঘুম ভাঙার পর থেকেই এই প্রশ্ন এখন দলা পাকাচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে।
প্রয়াত ডিডিসিএ প্রেসিডেন্ট অরুণ জেটলির আজ মূর্তি বসবে কোটলায়। বাহাদুর শাহ জাফর মার্গে এখন যে অনন্য সুন্দর কোটলা, তার পরিকাঠামো এক প্রকার বাড়ির উঠোনের মতোই সাজিয়েছিলেন জেটলি। নিজে দাঁড়িয়ে তদারকি করতেন কাজের।বিজেপি শিবিরে জেটলি ও মোদী-শাহর দোস্তি সুবিদিত ছিল। সম্ভবত সেই কারণে তাঁর মূর্তি উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
অমিত শাহর সঙ্গে ওই মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। জেটলির সঙ্গে সৌরভের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল ছিল। এদিনের অনুষ্ঠানে যদিও সৌরভ উপস্থিত থাকবেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে থাকার সুবাদে। কিন্তু তাতে কি! সৌরভের ও অমিত শাহ মোলাকাত নিয়েই এখন মুচমুচে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সৌরভ কি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন? যদি তা না হয়, তা হলে কোন ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তাঁকে?
এই সামগ্রিক কৌতূহলের একটা রবিবাসরীয় প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। এমনিতেই রাজ্য রাজনীতিতে ইদানীং অনেকের ধারণা হল, ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন তথা বিজেপির রাজ্য দফতরে পৌঁছনোর একটি রাস্তা রাজভবনের গা ঘেঁষে যাচ্ছে। গতকাল রবিবার সেই রাজভবনে গিয়েছিলেন সৌরভ। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ কথা হয়েছে। পরে সৌরভ বলেছেন, প্লিজ কোনও জল্পনা নয়। ওনাকে ইডেন গার্ডেন্স দেখাব বলে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলাম।
সৌরভের অনেক ঘনিষ্ঠের মতে, সরাসরি বিজেপিতে হয়তো যোগ দেবেন না মহারাজ। কারণ, তা হলে ক্রিকেট প্রশাসকের পদ ছাড়তে হতে পারে তাঁকে। তা ছাড়া সৌরভ অনেক বিজ্ঞাপন করেন। সে ক্ষেত্রেও চুক্তিবদ্ধ। রাজনীতিতে নামলে সেগুলো ছাড়তে হতে পারে।
তবে?
বিজেপির এক নেতার কথায়, ব্যাপারটা সব সময়ে সরলরেখায় ভাবতে হবে কে বলেছে? বিজেপিতে যোগ না দিয়েও তিনি কি ইনফ্লুয়েন্সার হতে পারেন না। আজ সোমবার অমিত শাহর সঙ্গে তাঁর যে ফ্রেম তৈরি হবে তাও তো প্রভাব ফেলতে পারে তাঁর অনুরাগীদের মনে। ধরা যাক, ইডেনে কোনও ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ হল। সেদিন অমিত শাহ বা পীযূষ গোয়েলকে আমন্ত্রণ করলেন সৌরভ। মোদ্দা এই বার্তা গেলেই হল যে, তিনি বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ শব্দটি ইদানীং বিপণন জগতে বহুল প্রচারিত। অনেকের মতে, বলিউডের অনেককেই ইনফ্লুয়েন্সার হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি। মূল কৌশল হল, সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় কারও মাধ্যমে জনমানসে প্রভাব ফেলা। উনিশের নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর একটি ইন্টারভিউ করেছিলেন অভিনেতা অক্ষয় কুমার। সেটার উদ্দেশ্য ছিল একই রকম। আবার টলিউডের এক ঝাঁক মুখ নিয়ে দিদি যখন মঞ্চে থাকেন, তখনও প্রকারান্তরে সেই কৌশল থাকে বলে অনেকের মত।