হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ইভিএম মেশিন ও ভিভিপ্যাট। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে উলুবেড়িয়ার উত্তর বিধানসভা তুলসিবেড়িয়ার ইন্দারকলোনি এলাকায়। অভিযোগ, সেক্টর অফিসার ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতে গতকাল রাতে ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছে দেন। খবর পেয়েই ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে ফেলে গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী।
সূত্রের খবর, সেক্টর অফিসার তপন সরকার গতকাল রাতে উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভার ১৭৫ নম্বর বুথের ইভিএম ও ভিভিপ্যাট এলাকার তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষের বাড়িতে পৌঁছে দেন। এলাকাবাসীর বক্তব্য, রাত ১টা নাগাদ মারুতি গাড়িতে চাপিয়ে মোট চারটি ইভিএম ও চারটি ভিভিপ্যাট গৌতমবাবুর বাড়িতে পৌঁছে দেন সেক্টর অফিসার। এলাকার লোকজন খবর পেয়েই স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের খবর দেয়। গৌতমবাবুর বাড়ি ঘিরে ফেলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীরা। সেক্টর অফিসারকেও ঘেরাও করে রাখা হয়। অশান্তি চরমে উঠলে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রাজাপুর থানার পুলিশ বাহিনী।
সূত্রের খবর, পুলিশ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। খবর দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেক্টর অফিসার তপন সরকারকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর নামে অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। জানা গিয়েছে, তপনবাবুকে সাসপেন্ড করেছে কমিশন।
তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষের বক্তব্য, তিনি নাকি ইভিএম মেশিন নিজের বাড়িতে রাখতে রাজি হননি। কিন্তু ওই সেক্টর অফিসার বলেন, তাঁর ভোটের সরঞ্জাম রাখার অন্য কোনও জায়গা নেই। গতকাল রাতে তাঁর বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট সেখানেই রাখা হয়েছিল। একই দাবি সেক্টর অফিসারেরও। তিনি বলেন, “গতকাল মাঝরাতে এলাকায় পৌঁছে দেখি সেন্টার বন্ধ। তখন ভোটের মেশিনগুলো রাখার জায়গা ছিল না। খুব ক্লান্ত ছিলাম। তাই একজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমি জানতাম না ওটা তৃণমূল নেতার বাড়ি ছিল।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, রিগিং করার উদ্দেশ্যেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, রাতভর ছাপ্পা ভোট দিয়ে রাখা হত। সকাল হলেই দেখানো হত বুথের ইভিএম মেশিন খারাপ। তখন ওই মেশিনগুলো ঢুকিয়ে দেওয়া হত। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে এখনও ইভিএম ও ভিভিপ্যাটগুলি উদ্ধার করা যায়নি। সেগুলো ঘিরে রেখেছে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। যদিও ওই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট বাজেয়াপ্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
এলাকায় এখনও যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। বুথ ঘিরে রেখেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।