করোনার ‘হটস্পট’ এলাকাগুলিতে কন্টেনমেন্ট জোন তৈরি করতে হবে, কড়া নির্দেশ রাজ্য সরকারের

করোনা সংক্রমণ কমছে রাজ্যে। কিন্তু কয়েকটি জেলায় সংক্রমণের হার চিন্তার কারণ। তাতে রাশ টেনার চেষ্টায় কন্টেনমেন্ট এলাকার পরিধি বাড়িয়ে ফের কড়া নিয়ন্ত্রণবিধি ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কন্টেনমেন্ট জোনগুলিকে দরকার হলে আরও ছোট ছোট এলাকা তথা মাইক্রোকন্টেনমেন্টে ভাগ করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় করোনা পরীক্ষা, কনট্যাক্ট ট্রেসিং ও আক্রান্ত রোগীদের শণাক্ত করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

গত বছর রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পরে অধিক সংক্রামিত এলাকা বা হটস্পটগুলিকে চিহ্নিত করে কন্টেনমেন্ট জোন তৈরি করা হয়েছিল।  সেই হিসেবেই কলকাতায় প্রায় ১৮০০ কন্টেনমেন্ট জোন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পরে সংক্রমণ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসার পরে সেইসব তুলে নেওয়া হয়।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, গত বছর লকডাউন চলাকালীন করোনা সংক্রমণের হার মোটের উপরে নিয়ন্ত্রণে ছিল। তার জেরেই কমিয়ে আনা হয়েছিল কন্টেনমেন্ট এলাকার সংখ্যা। কিন্তু আনলক শুরু হওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে গা-ছাড়া মনোভাব ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছিল। দূরত্ববিধি না-মেনে ভিড় বাড়ছিল পথেঘাটে, বাজার-দোকানে। মাস্ক পরার ক্ষেত্রেও উদাসীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন ফের রাজ্যে সংক্রমণের গ্রাফ নিয়ন্ত্রণেই আছে। কিন্তু কিছু জেলায় সংক্রমণের হার চিন্তার কারণ। তাই সেইসব জেলাগুলির কোন এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে তা দ্রুত চিহ্নিত করে ফের কন্টেনমেন্ট জোনে ভাগ করতে হবে। প্রয়োজনে মাইক্রোকন্টেনমেন্ট এলাকাতেও ভাগ করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। জেলাশাসকের এবং কলকাতা পুরসভার কমিশনারকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। চিঠিতে বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন, সংক্রমণ কিছুটা কমলেও সতর্ক থাকতে হবে। কড়াভাবে কন্টেনটেন্ট জোনে বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।

রাজ্যে কোভিড বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ১৫ দিন বাড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনই বাস মেট্রো লোকাল ট্রেন-সহ কোনও গণপরিবহণ চালু হচ্ছে না বাংলায়। কোভিড পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পদক্ষেপ করছে নবান্ন।

সূত্রের খবর, যে সমস্ত জেলাগুলিতে এখনও দৈনিক করোনা সংক্রমণ ২০০-র বেশি রয়েছে, সেখানে ছোটো ছোটো কনটেনমেন্ট জোন তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসকদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, করোনার প্রকোপ আরও কমাতে হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আপনারা কনটেনমেন্ট জোন তৈরির ব্যবস্থা করুন।

রাজ্যের সাত থেকে আটটি জেলায় এখনও রোজ ২০০ মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.