তাঁকে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলায় কদিন আগে শুভেন্দু অধিকারীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বার অভিষেককে পাল্টা আইনি নোটিস পাঠালেন শুভেন্দুর আইনজীবী। তাতে লেখা হয়েছে, আপনি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। এই সব মিথ্যা আরোপকে একটা বাড়ন্ত বাচ্চার অপরিণত বুদ্ধি বলে বিবেচনা করতে পারতেন আমার মক্কেল। কিন্তু আপনার বয়স হয়েছে। আপনি লোকসভার সাংসদ তথা জনপ্রতিনিধি। এক জন সাংসদের দায়িত্বশীল হয়ে কথা বলা উচিত।
নোটিসে এ সব প্রাক কথনের পর সুদীপ্ত সেনের চিঠির কথা তোলা হয়েছে। ওই চিঠিকে উদ্ধৃত করে সম্প্রতি কুলতলির সভা থেকে অভিষেক বলেছিলেন, আমি না সুদীপ্ত সেন লিখেছেন। আই হ্যাভ পেইড সিক্স ক্রোরস টু শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর আইনজীবীর বক্তব্য, একে তো সুদীপ্ত সেনের চিঠির প্রামাণ্য নথি বা সাক্ষ্য হিসাবে কোনও মূল্যই নেই। দ্বিতীয়ত, তাঁর মক্কেলের সন্দেহ যে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে ওই চিঠি লেখানো হয়েছিল। এর পিছনে ছিলেন কিছু প্রভাবশালী। আর এখন তো শুভেন্দুর সন্দেহ সেই প্রভাবশালীদের মধ্যে আপনি অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও রয়েছেন।
শুভেন্দু মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সুদীপ্ত সেন ওই চিঠি লিখেছিল। ওই চিঠিটি তদন্ত করে দেখার ব্যাপারে তখনই সিবিআই ডাইরেক্টরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। অভিষেককে পাঠানো আইনি নোটিসে শুভেন্দুর মোদ্দা বক্তব্য, গোটা ব্যাপারটা যে সাজানো তা আপাত ভাবে দেখেই সন্দেহ হচ্ছে। কারণ, চিঠিটির প্রতিলিপি প্রথমে প্রশান্ত কিশোর তথা ও আই প্যাকের কর্মীরা হোয়াটসঅ্যাপ করে সাংবাদিকদের কাছে পাঠান। তার পর তা নিয়ে অভিষেক রাজনৈতিক প্রচারে নেমেছেন।
শুভেন্দুর আইনজীবীর মতে, এটা শুধু মানহানিকর তা নয়, সারদা তদন্তকে প্রভাবিত করা ও ক্রিমিনাল কনটেম্পটের সামিল।
শুধু সুদীপ্ত সেনের চিঠি নয়, নারদ স্টিং অপারেশনের প্রসঙ্গ টেনেও শুভেন্দুর উদ্দেশে অভিষেক বলেছেন, তোলাবাজ তো তুমিও। তোমাকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে।
শুভেন্দুর আইনজীবীর বক্তব্য, নারদ মামলা বিচারাধীন। তা নিয়েও এ ধরনের মন্তব্য করা যায় না। সেই সঙ্গে নোটিসে অভিষেককে এক প্রকার কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে যে, আপনি বলেছেন যে আপনাকে তোলাবাজ প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসিতে ঝুলে যাবেন। প্রথম কথা হল, আত্মহত্যার অধিকার ভারতীয় সংবিধানে নেই। আর দ্বিতীয় কথা হল, তোলাবাজির জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে শাস্তির বিধান রয়েছে। প্রমাণিত হলে সেই আইনি ব্যবস্থাই হবে নিশ্চয়ই।