তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পর্যবেক্ষক পদ তুলে দেওয়া যে শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছাড়ার অন্যতম কারণ তা দ্য ওয়াল-এর একাধিক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুর্গাপুরের সভা থেকে ‘ভাইপো’র বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন তরুণ বিজেপি নেতা। এদিন তিনি বলেন, “কেন আমাকে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার অবজার্ভার থেকে সরিয়েছিল ভাইপো? কারণ নিতুড়ি-সাতুড়ির কয়লা আর বালিটা নিতে হবে বলে।”
একটা সময় জঙ্গলমহলে সংগঠনের দায়িত্ব শুভেন্দুকে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষকও ছিলেন তিনি। পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যুব তৃণমূল সভাপতি হওয়ার পর শুভেন্দুকে ওই দুই জেলার পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেন মমতা। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রদবদলে শুভেন্দুকে এমন তিনটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় যেখানে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি ছিল অতিশয় দুর্বল। ওই তিন জেলা হল উত্তর দিনাজপুর, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ। এর মধ্যে মালদহে ২০১৬ সালের ভোটে একটিও আসন পায়নি তৃণমূল।
এদিন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগে দুর্গাপুরে পদযাত্রা শুরুর আগে সভায় বক্তৃতা দেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, “আমি যখন অমিতজির মঞ্চ থেকে বললাম তোলাবাজ ভাইপো হঠাও, বাংলা বাঁচাও তখন খুব গায়ে লেগেছিল। এখন তো প্রমাণ হচ্ছে, লালা কে? গণেশ বাগাড়িয়া কে? গোটা দুর্গাপুর, আসানসোল, জামুড়িয়া, বারাবনী জুড়ে অবৈধ কয়লার কারবার চলেছে। বালি তুলে নদীপথের মানচিত্র বদলে দেওয়া হয়েছে।” এদিনও যুব তৃণমূলের সাত নম্বর সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রর নাম করে শুভেন্দু বলেন, “সিবিআই চৌকাঠ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এরপরেই ভাইপো।”
শুভেন্দু এদিন দুর্গাপুরের বাম-কংগ্রেস কর্মীদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, “আপনারা মিছিলে যাচ্ছেন যান। কিন্তু ভোটটা বিজেপিকে দিন। বিজেপি সরকারে এলে পঞ্চায়েতে ভোট হবে। যে ভাবে ২০১৭ সালে দুর্গাপুর পুরনিগমের ভোটে মুখে গামছা বাঁধা দুষ্কৃতীরা ভোট লুঠ করেছিল তা আর হবে না। ভারতীয় জনতা পার্টি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।”
এদিনের কর্মসূচিতে সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া, বাবুল সুপ্রিয়, অর্জুন সিংরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে সব জায়গাতেই এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে শুভেন্দুই। এদিন আসানসোলের রোড-শোতেও যেন ঢল নেমেছিল। সাড়ে তিন কিলোমিটার রোড শো শেষ করে আড়াই ঘন্টার মতো সময় লেগে যায়।