রবিবাসরীয় বিকেলে ডায়মন্ডহারবারের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন নাম না করে তাঁর সমালোচনা করেছিলেন, তখনই আন্দাজ করা গেছিল, এর পাল্টা আসবে।
৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে অনিবার্য ভাবেই তা হল। মঙ্গলবার টিটাগড় থেকে খড়দহ পর্যন্ত রোড শো ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ, বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় প্রমুখ ছিলেন সেই মিছিলে। তার পর মিছিল শেষে জনসভায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু ফের নিশানা করেন ‘ভাইপো’-কে। তীর্যক ভাবে বলেন, ডায়মন্ডহারবারে সেদিন আমাকে উদ্দেশ করে বলেছে, তোমার লজ্জা করে না ওই বাড়িতে থাকতে। তোমার বাড়ির লোকজনও তো তোমার সঙ্গে যায়নি। বাবা, ভাই তো জো়ড়াফুলেই আছেন।
এ কথা বলেই শুভেন্দু বলেন, “আরে বাবুসোনা! সবে তো পদ্মর কুঁড়ি ফুটেছে। বসন্তে রাম নবমী আসুক। আমার বাড়িতে পদ্ম ফুটবে। তোমার বাড়িতে ঢুকেও পদ্ম ফোটাব। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে পদ্ম ফুটবে”।
শুভেন্দু এ কথা বলতেই এদিন তুমুল হাততালি পড়তে শুরু করে। টিটাগড় থেকে খড়দহ পর্যন্ত রোড শো’তে এদিন কাতারে কাতারে লোক যোগ দেন। রাস্তার দু’পাশে উপচে পড়ে ভিড়। সাম্প্রতিক কালে উত্তর চব্বিশ পরগনায় কোনও মিছিলে এত লোকের ঢল দেখা যায়নি।
তরুণ বিজেপি নেতার এদিনের কথা থেকে অনেকে যেমন ধরে নিচ্ছেন যে কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ও তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও বিজেপিতে যাবেন। তেমনই জল্পনা শুরু হয়েছে, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে কে বিজেপিতে যাচ্ছেন।
শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার আগে তাঁর সঙ্গে খোলাখুলিই সুসম্পর্ক রেখে চলতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ভাই কার্ত্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনেই তাঁদের অরাজনৈতিক সভায় শুভেন্দুকে এর আগে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কার্ত্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু গিয়েওছেন। অনেকের মতে, এদিনের পর তাঁদের উপর নজর থাকবে।
ডায়মন্ডহারবারের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নারদ কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তার পর কারও নাম না করে বলেছিলেন, কাগজে মুড়ে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে তোমাকে, তোলাবাজ তো তুমি!
এদিন শুভেন্দু সেই প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, আমি তোলাবাজ বলেছি বলে ভাইপোর রাগ রয়েছে। আমাকে সারদা নারদা তুলে তোলাবাজ বলছে। আমি বলছি, তদন্ত তো চলছে। এজেন্সি তদন্ত করছে। তদন্তে দেখা যাক কে দোষী, কে নির্দোষ!