শনিবার রাত তখন ন’টা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছিলেন লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীকে ইংরাজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেছিলেন অধীরবাবু। তাছাড়া আরও একটি বিষয় ছিল।
অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আসার পথে ভারতের যে নাবিকরা চিনে আটকে রয়েছেন তাঁদের ফেরানোর বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান কংগ্রেস নেতা। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান, কূটনৈতিক পরিসরে বেজিংয়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত কথা বলা হচ্ছে। মোদী আশা প্রকাশ করেছেন, শিগগির ভারতীয় নাবিকদের জাহাজ সমেত দেশে ফেরানোর বন্দোবস্ত করা হবে।
সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে কথা হতে হতেই মোদী বাংলার ভোটের কথা তোলেন। সৌজন্যের খাতিরেই অধীরবাবু প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন কবে তিনি বাংলায় আসবেন। জবাবে মোদী জানিয়েছেন, “২৩ তারিখ বাংলায় যাচ্ছি।”
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্য ইতিমধ্যেই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হবে নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী। তার সূচনা হবে আগামী ২৩ জানুয়ারি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বাংলার মাটি থেকেই সেই সূচনা করবেন।
অনেকের মতে, বাংলার রাজনীতিতে যখন বাঙালি-অবাঙালি-বহিরাগত ইস্যু হয়ে উঠছে, তখন বাঙালির অন্যতম আবেগের নাম নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে বাংলার ভোটের আগে কৌশলেই ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আসার পথে গত ১৩ জুন চিনের জিংট্যাং বন্দরে নোঙর করে ভারতীয় জাহাজ এমভি অনস্তেশিয়া। ওই জাহাজে রয়েছেন ২৩ জন নাবিক। অন্য জাহাজ এমভি জগ আনন্দ অস্ট্রেলিয়া থেকে চিনের কাওফেইডিয়ান বন্দরে ভিড়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর। তার পর থেকেই দু’টি জাহাজ এখনও সেখানে দাঁড়িয়ে। মোট ৩৯ জন ভারতীয় নাবিক গত কয়েক মাস ধরে গভীর সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। খাদ্য সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে দিন চারেক আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন অধীর চৌধুরী। শনিবার সেই বিষয় নিয়েই ফোন করেন তিনি। তখনই তাঁকে বাংলায় আসার সূচি জানান মোদী।